বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়ার চাইতে যদি ভাই-বোন থাকে, তাহলে অনেক বেশি আনন্দদায়ক হয় জীবন। ঘরেই একজন ভালো বন্ধু পাওয়া যায় যার সাথে সব কিছু নিয়ে কথা বলা যায়, সব সমস্যার একসাথে সমাধান খোঁজা যায়। আর যদি ভাই বা বোন জমজ হয়, তাহলে তো কথাই নেই। সব কিছুর আনন্দ যেন দ্বিগুণ হয়ে যায়। অন্তত অনেকেই তা মনে করে থাকেন।
কিন্তু অনেক সময় যমজ বাচ্চাদের মধ্যে অনেক ধরনের সমস্যা হয় যা সাধারণ দৃষ্টিতে বাবা মায়ের চোখে ধরা না। কিন্তু এই সমস্যাগুলো তাদের মানসিকতা পরিপূর্ণ বিকাশের পথে অনেক বড় একটি বাধা। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক যমজ বাচ্চারা কী ধরণের সমস্যায় পড়ে থাকে।
নিজের পরিচয় সংকট
যমজ হওয়ার ফলে অনেকেই যমজ বাচ্চাদের আলাদা করে চিনতে ভুল করে থাকেন। অনেকেই এই ঘটনাটিকে তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না। কিন্তু এই চিনতে না পারার ব্যাপারটি যমজ বাচ্চাদের মনে ফেলে খুব খারাপ একধরণের প্রভাব। তারা নিজেদের পরিচয়ের সংকটে ভুগতে শুরু করে। তারা মনে করতে থাকে যমজ হওয়া তাদের জন্য অনেক খারাপ একটি বিষয়। তাই এই ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা প্রয়োজন, বিশেষ করে বাবা মায়ের।
প্রতিযোগী মনোভাব
অনেক অভিভাবক মনে করেন নিজের বাচ্চাদের মধ্যে প্রতিযোগী মনোভাব তৈরি করে দিলে তারা আরও ভালো ফলাফল অর্জন করবে। এটি অনেক বড় একটি ভুল ধারণা। এই কাজটি সন্তানদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে। বিশেষ করে যমজ বাচ্চারা এই ধরণের মানসিকতার শিকার হয়ে অনেক বেশি প্রতিযোগিতার নেশায় মেতে ওঠে এবং যার ফলাফল অনেক বেশি খারাপ হয়।
বয়সের সাথে সাথে চেহারার পরিবর্তন
যমজ বাচ্চারা যখন বড় হতে থাকে তখন তাদের চেহারার মধ্যে পরিবর্তন আসা শুরু হয়। এই সময়টা তাদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। চেহারার পরিবর্তনের এই সময়ে তারা নিজেরা ভালো মন্দের নিজস্ব একটি সংজ্ঞা খুঁজে নেয় এবং একে অপরের সাথে নিজেদের তুলনা করা শুরু করে। এতে করে তাদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায় ও একে অপরের প্রতি বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি হয়।
বাবা মায়ের আচরণের তারতম্য
যমজ বাচ্চাদের মধ্যে খুব মজার একটি ব্যাপার লক্ষ্য করা যায় আর তা হলো চেহারা একই ধরণের হলেও তাদের স্বভাব থাকে পুরোপুরি অন্যরকম। এই জিনিসটির কারনে অবিভাবকের আচরণের তারতম্য অনেক বেশি চোখে পড়ে। দেখা গেল একজন পড়ালেখায় অনেক ভালো কিন্তু অন্যজন তেমন ভালো করছে না।
তখন বাবা মা উদাহরণ হিসেবে ভালো ফলাফলের সন্তানের নাম উল্লেখ করে ওপর সন্তানকে অনুসারী হতে বলেন যা সন্তানের মনে বিরূপ মনোভাবের তৈরি করে। এই কাজটি করা উচিৎ নয়। উদাহরণ দিলেও নিজেদের সন্তানের মধ্যে এই ধরণের অনুসরণের কথা বলা উচিৎ নয়।
একই মানুষকে/বস্তুকে পছন্দ হয়ে যাওয়া
যমজ বাচ্চাদের মাঝে সবচাইতে বড় সমস্যাটি দেখা যায় এই ক্ষেত্রে। অনেক সময়ই দেখা যায় দুটি যমজ ভাই বা বোনেরা একই মানুষের প্রেমে পড়ে যায়। কিংবা একই বস্তুর প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। যা জীবনে চলার পথে পদে পদে বাঁধার সৃষ্টি করে।