আমদানি করা দুরারোগ্য ব্যাধির অধিকাংশ ওষুধ তদারকি ছাড়াই বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। প্রতিটি ওষুধের গায়ে খুচরা মূল্য ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা থাকাটা বাধ্যতামূলক হলেও এসব ওষুধের কোনোটিতেই নেই বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দৈনিক বণিক বার্তা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, লিভারের রোগে আক্রান্ত রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় ১০০ মিলিগ্রামের অ্যালবুমিন ২০% ভারতীয় ইনজেকশন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা একই ওষুধ বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৫০০ টাকায়। আবার দেশীয় স্কয়ার কোম্পানির তৈরি ব্যথানাশক নিউরো-বি ইনজেকশন বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। জার্মানি থেকে আমদানি করা একই ওষুধ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। ক্যান্সারের ইনজেকশন সাইক্লোফসফেমাইড ১ গ্রাম ভারতীয়টি ৩০০ ও জার্মানিরটি ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ওষুধের মূল্যে এ রকম ফারাক হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে আমদানিকৃত ওষুধের প্যাকেটের গায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য লেখা না থাকাকেই দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা। মিটফোর্ড এলাকার পাইকারি ওষুধ ব্যবসায়ী সাফিন আহমেদ জানান, বিদেশ থেকে আনা কোনো কোনো ক্যান্সারের ইনজেকশন ৩০-৪০ হাজার টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। অথচ দেশীয় কোম্পানির তৈরি ওই ওষুধ মাত্র ১০-১২ হাজার টাকায় পাওয়া যায়। আবার ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকার ওষুধ ৮-৯ হাজার টাকা দামে বিক্রির ঘটনাও ঘটছে। এক কথায় যে যে দামে পারছে, বিক্রি করছে দুরারোগ্য ব্যাধির এসব ওষুধ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত হেলথ বুলেটিংয়ের তথ্য উপস্থাপন করে পত্রিকাটি জানায়, ২০০৯ সালে জনস্বাস্থ্য ল্যাবরেটরিতে ৩ হাজার ১৪৫টি ওষুধের নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৬৭টি নিম্নমানের বলে চিহ্নিত হয়। একইভাবে ২০১০-এ ৫ হাজার ৬টি নমুনার মধ্যে ৮২টি, ২০১১ সালে ৩ হাজার ৭২০টির মধ্যে ১০৪টি, ২০১২ সালে ৪ হাজার ২৩৯টির মধ্যে ৯৫টি এবং ২০১৩ সালে ৩ হাজার ৮৩২টির মধ্যে ১৩৪টি ওষুধ নিম্নমানের বলে শনাক্ত হয়।