যখন কিছুই নেই, কেউ নেই আর আশেপাশে
ঘুমের অব্যবহূত অযুত ঔষধ
জমে ওঠে চোখের উপরে মেঘ হয়ে
ঔষধ খেয়েও যত না আসা ঘুমেরা
কপালের নিচে নিচে নিঃশব্দ করাত; গাছ কাটে
ফলে শব্দ নৈঃশব্দের ঐ পাশে
যায় একদিন কেউ কেউ, চলে যায়।
............
শুনেছ কি?
কোনোদিন শুনেছ কি তাকে অন্ধকারে? বাতাসের
শব্দ নয়— কাণ্ড, ডাল, নিঃশব্দ শিকড়, এইসব?
মহা জীবনের বাস চলেছে নীরবে তার দেহে;
সরোদ দুহাতে নিয়ে স্বল্পভাষী গাছ জেগে আছে।
পাতার ভিতর দিয়ে সারাদিন ট্রেন আসে যায়;
অরণ্যের বাঁকে বাঁকে অসীম ষ্টেশন কথা বলে।
রেলপথ পার হয়ে, বাতাসের অন্য পাশে জাগে
খাড়া নদী; তাকে আজো শোনো নাই তুমি।
কোনো ডালে ঘুম নেই; সমাহিত হয়ে
থাকা আছে সব ডালে। এ স্থির শরীরে
এক চির বিচলিত কসমস। সবুজ তাঁবুর
শীর্ষে অকল্পিত নীরবতা মৃদু কাঁপে।
আজ দেখি আমার যাপিত জীবনের প্রতি ডালে
পোড়া মানুষের দেহ মুখ নিচু করে বসে আছে।
সহ যাত্রীদের চোখে অতর্কিত আগুনের ভয়।
ভুলো মনে পথে নেমে ছাই হয়ে গেছে কত জন।
কোনো সত্য নয়, এই অবাস্তবতা চারদিকে।
জলে ডুবে গেছে জানালারা; ওই পারে
চক্ষুষ্মান নীরব অপেক্ষা নিবন্ধিত। রাখা আছে
শিকড়ের মধ্যে এই পৃথিবীর মনঃকষ্টগুলি।
গ্যালাক্সিতে জ্বলে নেভে ডাল। কত কালো
শরীরের অথৈ জলে আসে যায় ধবল ষ্টীমার;
ঘুমঘোরে অগোচর গান তৈরি হলে, তাকে শুনে,
ঘুম থেকে উঠে বসে থাকে অন্ধকারে পোড়া দেহ।
---------
এখন
ভাতের স্বপ্নে হাঁটছে একাকী ছায়া:
অভুক্ত থাকে পথে বাস করে বলে;
সে কি তুমি নও, জগত খরার দিনে?
সীমান্তে গাছ পড়েছে ভীষণ নুয়ে
আছে জেগে মাঠে ইটের ভাঁটার ঘাস;
জলে শোনা যায় গভীর কুয়ার ধ্বনি—
কবে ভোর হবে? কখন যে হবে রাত
সময়কে মেনে লাটিম ঘোরে না আর
ভাতের স্বপ্নে হাঁটছে একাকী ছায়া
শেষহীন পথ, মরুভূমি গম্ভীরা;
তৃষ্ণাকে ভাবে; চোখ তুলে টের পায়:
অতল মরুতে থাকে না সরাইখানা
আগুনের ঋজু পাখি ওড়ে সব পথে
বহু পোড়া দেহ চলে ছায়া হয়ে সাথে