মেটাফর
ম্রিয়মাণ আলোয় ভেঙে গেলে নিঃশব্দ প্রতিচ্ছবি
উপাসনালয়ের নির্জনতা খুন হয় পবিত্র ব্যাৎসায়নে;
যারা আজও নিজেদের মানুষ দাবি করে, তাদের
কর্ণিয়া ঘিরে লাল পিঁপড়ের দল উত্তুঙ্গ নাচে আর
পাহাড়সমেত ভরসন্ধ্যা উড়ে যায় মেঘের শাসনে।
মিছিলফেরত মানুষ ছিল নদী-নির্মাতা, বনস্পতি ভূমে
পবিত্র যোগফল খোদাই করে গড়েছে সভ্যতার বন্দর
এখন তালুতে বন্দি মরুমুদ্রা
প্রান্তবাসী তবু খোঁপায় গোঁজে নদীভ্রমণের রূপকথা!
মিছিলফেরত মানুষ এখন বসন্তের অথর্ব পুরোহিত
অবগাহনে খোঁজে মরুজল!
রোদের কঙ্কাল
কেন্দ্র অভিযানের সাহস নেই বলে
বয়সী হাওয়া থেকে কুড়িয়ে নিয়েছি রোদফুল
গোপন পকেটে তার-ই ওড়াউড়িÑঅবিমিশ্র;
এক সময় অপ্রতিরোধ্য ভাঙন ওঠে নিজস্ব আকাশে
তখন খুঁড়িয়ে এসে দাঁড়াই সমুদ্রের সামনে
কিংবা ঠিক সমুদ্রও নয়,
রোদভেজা চোখে তার গন্ধ খুঁজি, মাঠময়...
অবশেষে তালুতে উঠে আসা বায়বীয় সার্কাস
লোকচক্ষুর আড়ালে পান করেÑমৃত্যুরাশি;
এভাবে প্রতিদিনের ভাগ্যরেখা ছিঁড়ে বেঁচে উঠি
আমাকে রোদের কঙ্কাল ভাবতেই পারো!
এভাবে জানা হয়ে যাবে
তারা জেনে যাবে এইখেলা, একদিন
সম্মোহিত মানুষের ভবিষ্যৎ নিয়ে
কেউ এসে দাঁড়িয়েছে বৃত্তের ভেতর
যাকে ঘিরে দীর্ঘায়িত হয়েছে, কেবলি প্রার্থনা
সে ছিল অন্ধ, অথচ অফুরাণ নিসর্গের সদ্ভাবে
বাড়িয়ে দিয়েছে পৃথিবীতেÑআয়ুর সীমানা!
তারা জেনে যাবে, এসেছিল কেউ
হাতে গোলক, পকেটে লুকানো আয়না
বৃত্তের দেয়ালে ঝুলিয়ে সবুজ সংকেত
লু-হাওয়ায় পেতেছে রোদের মখমল, আর
নিজেকে ভেঙেছে অসংখ্য টুকরো, স্পৃহাহীন দ্বিধায়!
এভাবে জানা হয়ে যাবে বেশকিছু তার
যদিও গভীর হবে রাত বিচ্ছেদের টানে!
মৃতের খোলস
কাচ-ভাঙার মতো ভেঙে পড়ছে ‘পরমবন্ধু’
তখন আমি ঝরণাজলের শীতলতায় ডুবছি-ভাসছি
দূরে বয়সী বৃক্ষ আর-
ক্লান্ত চড়–ইয়ের জলস্নান ছাপিয়ে ওঠা ওই শব্দ
সহস্র আলোকবর্ষ থেকেও জাগিয়ে রেখেছে আমাকে।
যখন সঘন অন্ধকার, একে একে খুলে যায় অন্তঃপুর
কতিপয় আরশোলার হুল ছুঁয়ে যায় তৃষ্ণার ঠোঁট
নিজেকে খুঁজে পাই কাচের ভগ্নস্তূপে
আমি কী মৃতের খোলস ঢাকা রয়েছি অনাদিকাল?
শিথিলায়ন
হতে চাই ব্যক্তিগত, উপেক্ষায় জাগিয়ে রাখো
অবেলার মানুষ আমি, ভীষণ অন্তর্গত।
বিশ্বাসে ফুটিয়ে দেখো, প্রণোদিত করো শব্দের চাবুকে
কিংবা নিঃশ্বাসের বিষে পোড়াও বারবার
স্বীকারে-অস্বীকারে ঠেলে দাও ঝলসানো রোদের গভীরে
দিতে পারো সশ্রম দন্ড আদর্শচ্যুতির
তবু ব্যক্তিগত করে নাও, হারিয়ে যাওয়ার আগে। অলঙ্করণঃ নাজিব তারিক