আজকালকার যুগে যেখানে বিবাহচ্ছেদের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে সেখানে একটি সফল এবং দীর্ঘস্থায়ী বৈবাহিক সম্পর্কের অধিকারী হওয়া অনেক বড় একটি ব্যাপার। কথাটি দুঃখজনক হলেও সত্যি যে আগেকার মতো দীর্ঘস্থায়ী সুখী দম্পতি তেমন চোখেই পড়ে না। শুধু ভালোবাসা দিয়েই একটি সুখী ও সুন্দর জীবন যাপন সম্ভব নয়।
আজকাল সমস্যা হলো দম্পতিদের মধ্যকার পারস্পরিক বোঝাবোঝি এবং দূরত্বের। যার ফলে দাম্পত্যজীবনের মধুরতা হারিয়ে যায়। অনেকেই চেষ্টা করেন নিজের সম্পর্কটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু নানা পরিস্থিতি ও নানা ধরণের সমস্যায় পড়ে হয়ে উঠে না। কিন্তু সামান্য কাজেই সম্পর্কের মধুরতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব এবং সফলভাবেই বৈবাহিক সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী করা সম্ভব। ব্যাপারগুলো হয়তো আপনি জানেন, কিন্তু বুঝেও না বোঝার ভান করে যাচ্ছেন। জানতে চান সেইসকল মূলমন্ত্রগুলোকে? চলুন তবে দেখে নেয়া যাক।
বিশ্বাস ও স্বচ্ছতা
একটি সম্পর্কের মূল ভিত্তি হলো বিশ্বাস। একে অপরকে বিশ্বাসের মাধ্যমেই সম্পর্কের মজবুত গঠন তৈরি হয়। আর বিশ্বাস তখনই আসে যখন সম্পর্কে একেঅপরের প্রতি স্বচ্ছতার সৃষ্টি হয়। একটি স্বচ্ছ সম্পর্কে বিশ্বাসের কমতি থাকে না। থাকে না ভালবাসারও কমতি। আর এই সব মিলেই সম্পর্ক হয় সফল ও দীর্ঘস্থায়ী।
একে অপরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করা
দাম্পত্য জীবনের অনেকটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে সম্মান ও শ্রদ্ধা। যা দুপক্ষ থেকেই কাম্য। একে অপরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করতে জানলেই একে অপরের মতামত ও ইচ্ছা অনিচ্ছার গুরুত্ব দেয়া সম্ভব হয়। এতে করে সম্পর্কে আসে গভীরতা। একজনকে বিয়ে করার মানে এই নয় যে আপনি তাকে কিনে নিয়েছেন, তাকে তার প্রাপ্য সম্মান দিলেই আপনাদের মধ্যকার সম্পর্ক হবে গভীর। এভাবেই সম্পর্ক হয় দীর্ঘস্থায়ী।
কথা বলে ভুল বোঝাবোঝি দূর করা
অনেক সময়েই সামান্য কারণে ভুল বোঝাবোঝির কারণে সম্পর্ক ভাঙা পর্যন্ত গড়ায়। কিন্তু এই সামান্য ভুল বোঝাবোঝি খুব সহজেই কথা বলার মাধ্যমে দূর করা সম্ভব। শুধু দরকার এই কথা বলে সমস্যা সমাধানের মনোভাব। কথা বলে ভুল বোঝাবোঝি দূর করে একেঅপরের সম্পর্কে ভালো ধারণার তৈরি হয় যা সম্পর্কে মধুরতা বৃদ্ধি করে।
শ্বশুরবাড়ির সাথে ভালো সম্পর্ক
যখন বিয়ের সম্পর্কের সৃষ্টি হয় তখন শুধুমাত্র দুজনের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয় না। সম্পর্ক তৈরি হত দুটি পরিবারের মধ্যে। এবং সম্পর্কের গভীরতা, স্থায়িত্ব অনেকাংশেই নির্ভর করে এই দুটি পরিবারের ওপরেও। স্বামী ও স্ত্রীর একেঅপরের পরিবারের প্রতি দায়িত্বকর্তব্য পালনের মাধ্যমেও প্রকাশ হয় একেঅপরের প্রতি মায়া মমতা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। তাই দুপক্ষের বন্ধন যতোটা গাঢ় হবে সম্পর্ক ততোটাই সফল হবে।
সম্পর্কে মধুরতা ধরে রাখা
দাম্পত্য জীবনে পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে যেয়ে অনেকেই সম্পর্কের মধুরতা হারিয়ে ফেলেন। এতে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। এই জিনিসটি সম্পর্কের জন্য অনেক ক্ষতিকর। সম্পর্ক সফল ও দীর্ঘস্থায়ী করতে সম্পর্কে যেকোনো মূল্যে মধুরতা ধরে রাখতে হবে। একেক সময়ে নানা ধরণের কৌশলে নানা উপায়ে সম্পর্কে মধুরতা ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে দম্পতিদের। তবেই সম্পর্ক হবে সফল ও দীর্ঘস্থায়ী।
দুপক্ষেরই সহনশীলতা ও সহানুভূতির মনোভাব
সম্পর্ক দুজনের মাধ্যমে তৈরি হয়। এখানে দুজনেরই অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। একজনের দ্বারা পুরো সম্পর্কটি টেনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় কোনোভাবেই। দুপক্ষের সহনশীল মনোভাবের দরুন দুজনে মধ্যে যে পারস্পরিক সমঝোতার সৃষ্টি হয় সেটিই দীর্ঘস্থায়ী সফল বৈবাহিক সম্পর্কের মূলমন্ত্র। সম্পর্কে দৃঢ়তা আনতে দুপক্ষেরই সহনশীলতা ও সহানুভূতির মনোভাবের প্রয়োজন রয়েছে।