সাময়িকী.কম
আলোকচিত্রী এলিস প্রৌজানস্কি ২০০৬ সাল থেকে সারা বিশ্বে ঘুরে ঘুরে শিশুর জন্মের ছবি তুলে আসছেন। তুলে আনা সেই ফটো সিরিজের নাম দিয়েছেন ‘বার্থ কালচার’।
প্রৌজানস্কির ছবিগুলো সন্তান জন্মদানের অভিজ্ঞতার বাস্তব আভাস দেয়। জানা যায় আমেরিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশ সমূহের হোম বার্থ ডেলিভারি সম্পর্কেও। প্রৌজানস্কি বলেন, ‘আমি ছবিতে তুলে আনতে চেয়েছিলাম সার্বজনীন মানব মুহূর্ত, সেটা মৃত্যু নয়, জন্ম। জন্মের বিষয়টা আমি বুঝতে পারতাম না। এখনো ব্যাপারটা আমার মনে ধোঁয়াশা। ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আমি আসলে আমার প্রশ্নগুলো ছুঁড়ে দিচ্ছিলাম।’
একজন আলোচিত্রীর লক্ষ্য থাকে জমাট নীরবতা ভেঙ্গে ফেলার, চারপাশের অন্ধকার থেকে দৃশ্যের জন্ম দেয়ার। প্রৌজানস্কি আরো বলেন, আমি দেখেছি লোকজন আমার এই ছবিগুলোকে বাঁকা চোখে দেখেছেন। তারা বলছেন, এইসব ছবি অগ্রহণযোগ্য। অথচ আমরা অবলীলায় দেখছি যুদ্ধের ছবি, মৃত্যুর ছবি। সেই সব যদি অগ্রহণযোগ্য না হয়, তবে জন্মের ছবি কেন অগ্রহণযোগ্য হবে?
প্রৌজানস্কি এই ব্যাপারটি কয়েকটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন। "আমি মনে করি এই বিষয়টি মানুষকে অস্বস্তি দিচ্ছে কারণ, এর সাথে যৌনতা, ভায়োলেন্স, নারী শক্তি এবং বায়োলজিক্যাল উপাদান জড়িত। আর একটা ব্যাপার হলো এটি আমাদের প্রত্যাশিত মাতৃত্ব সংস্কৃতির বিরোধী।"
"বার্থ কালচার” সিরিজের কাজ করার ফলে আলোকচিত্রী মনে করেন ২০১২ সালে তার নিজের পুত্র জন্মদান সহজ করেছে। তিনি জানান "আমি জানতাম সন্তান জন্মদেয়া খুবই কঠিন কাজ কিন্তু অধিকাংশ নারীই এই সমস্যাগুলো মেনেই শিশুর জন্ম দেন, এটা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।”
প্রত্যেক মা ধারণ করে পৃথিবীর সবেচেয়ে মূল্যবান বস্তু, সন্তান। সন্তানের জন্মদানই প্রমাণ করেন নারীর ক্ষমতা। আর এটিই তুলে ধরতে চেয়েছেন প্রৌজানস্কি।
প্রৌজানস্কির তোলা কিছু আলোকচিত্র এখানে দেয়া হলো। এই বছরের নভেম্বরে ব্রুকলিন, নিউইয়র্কে ‘বার্থ কালচার’ প্রদর্শিত হবে।

উইন্টার গার্ডেন, ফ্লোরিডা:

৩৮ বছর বয়েসী লরা মেজিয়া'র শিশুটি জন্ম নিচ্ছিলো একটি বার্থ প্লেইসে তার স্বামী ও ধাত্রীর সহায়তায়। যে বার্থ প্লেইসটি স্বল্পআয়ের নারীদের মাতৃত্বকালীন সেবা দিয়ে থাকে। যখন শিশুটির জন্মে সমস্যা দেখা দেয় তখন লরাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। C-সেকশন এর মাধ্যমে লরা একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়।

চুনহুহুব, কোয়ান্টানা রো, মেক্সিকো:

ধাত্রী এলসা গঞ্জালেস আয়লা, যিনি ঐতিহ্যবাহী মায়ান চিকিৎসায় দক্ষ। সিএএসএ ধাত্রী স্কুলের শিক্ষার্থীদের শেখাচ্ছিলেন কী করে প্রসব পরবর্তী ম্যাসাজ করতে হয়।

নিউইয়র্ক সিটি:

স্যোশাল জাস্টিস এ্যাক্টিভিস্ট জেন ক্যামিং তার নবজাতক পুত্রকে জন্মের পর প্রথম জড়িয়ে ধরেছে পরম মমতায়। পুত্রের জন্ম তার নিজের বাড়িতেই হয়। তার স্বামী, কন্যা আর ঘনিষ্ট বন্ধু রয়েছে পাশে।

স্যান ক্রিস্টোবাল, ডোমিনিক্যান রিপাবলিক:

একজন মা জুয়ান পাবলো পিনা হাসপাতালের ওয়ার্ডে তার নবজাতক শিশুকে নিয়ে শুয়ে আছেন।

লাগোস, নাইজেরিয়া:

ধাত্রী চিওমা ওচোম্মা ভ্রুণের হৃদস্পন্দন শোনার অপেক্ষা করছেন। এই ধাত্রী আলয়ে কোন ডাক্তার নেই। বস্তির গর্ভবতী নারীরা এখানে শিশুজন্মের সেবা নিয়ে থাকেন। যাইহোক, ধাত্রী শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত দিলেন যে, গর্ভের বাচ্চাটি মারা গেছে।
বিভাগ:

Author Name

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.