রফিকুল ইসলাম সাগর
সাময়িকী.কম
সাময়িকী.কম
আমাদের আশে পাশের হোটেল অথবা রেস্টুরেন্টে জীবনের প্রয়োজনে কখনো কখনো খেতে যাই। কারো কারো প্রতিদিন হোটেল-রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে হয়। এছাড়া পথে ঘাটে এখানে সেখানে বাইরের খোলা কতো খাবারইতো আমরা খাই। এসব খাবার আগে পরে আমাদের অনেকের মনে হরেক রকমের প্রশ্ন জাগে। খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে, খাবারটি কোথায় রান্না হয়েছে, কিভাবে রান্না হয়েছে, কি দিয়ে রান্না হয়েছে, কোন পানিতে ধোয়া হয়েছে এরকম নানান প্রশ্ন। সব প্রশ্নের উত্তর সব সময় মিলে না। অনেক ক্ষেত্রে একান্তই প্রশ্ন জাগে। আবার একান্তই মনকে কোন রকমের বুঝ দিয়ে খেয়ে নেই। যা হওয়ার হবে এমন ভেবে খেয়ে নেওয়ার মতো সাহস অনেক মানুষের মাঝেই নেই। বাইরের খোলা খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন যতই উঠুক তারপরেও আমরা থেমে নেই। সমাজে সবাই এক শ্রেনীর মানুষ না। কিছু শ্রেনীর মানুষের বাইরের খোলামেলা খাবারই ভরসা। তাছাড়া এসব খোলা খাবারের মান যাচাই-বাছাই করার জন্য কেউ নেই। নেই কোনো নিষেধাজ্ঞা। তাই যে যা ইচ্ছা তা খাওয়াচ্ছে।
ছবিতে দু'জন ব্যক্তি মহাখালীর একটি নোংরা ঝিলের পানিতে গরুর নাড়ি-ভুড়ি পরিস্কার করে ধুচ্ছে। প্রতিদিন খুব ভোরে তাদের এখানে এভাবেই নাড়ি-ভুড়ি ধুতে দেখা যায়। লক্ষ্য করেছি সকালে লোক সমাগম হওয়ার আগে আগেই তাদের ধোয়ার কাজ শেষ হয়ে যায়। প্রথম প্রথম মনে করতাম এগুলো ধুয়ে তারাই হয়তো খায়। মনের কৌতুহল মিটাতে খোজ খবর নিয়ে মিলল অন্যরকম উত্তর। এই দু'জন ব্যক্তি মহাখালীর একটি বস্তিতে থাকে। প্রতিদিন ফজরের নামাজের আগের সময়টাতে তারা যান মহাখালী বাজারের কসাই খানায়। সেখানে গরু জবাই হওয়ার পর তারা কসাইদের কাজে সাহায্য করেন। পানি এনে দেওয়া, ঝাড়ু দিয়ে রক্ত পরিস্কার করা অবশেষে কসাই খানা ধুয়ে মুছে পরিস্কার করা তাদের কাজ। বিনিময়ে পারিশ্রমিক হিসেবে তারা পান গরুর নাড়ি-ভুড়ি। এই নাড়ি-ভুড়ি তারা ঝিলের নোংরা পানিতে পরিস্কার করে ধুয়ে প্রতিদিন আশে পাশের নির্দিষ্ট ক'টি হোটেল রেস্টুরেন্ট এবং পথের হালিমের দোকানে বিক্রি করেন বলে কিছু বস্তিবাসী জানিয়েছেন। রোববার বাদে এটা তাদের নিত্যদিনের ব্যবসা বলে খোজ খবর নিয়েছি। এই নাড়ি-ভুড়িই যখন খাবারের জন্য আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয় তখন দেখে কি বুঝার উপায় আছে এটা কোথায় থেকে কিভাবে এসেছে।