সিঙ্গাপুর ভ্রমণের গল্প
রাইসা আনিলা রহমান 

আমাদের সিঙ্গাপুরের ভিসা হয়ে গেছে। টিকেট কাটাও শেষ। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে আমাদের ফ্লাইট। এদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের যাওয়া অনিশ্চিত। বাবা বলল, ‘আমরা যাবো। কিছুই হবে না ইনশাআল্লাহ।’

১৩ ফেব্রুয়ারি বিকাল বেলা আমরা সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্টে পৌঁছে গেলাম! খুব সুন্দর এয়ারপোর্ট। অনেক গাছপালা ভেতরে। সবুজে ভরা। একটি ঝরনাও আছে। মনে হয় আকাশ থেকে পানি ঝরছে। এয়ারপোর্ট ঘুরে দেখে চলে গেলাম এমআরটি স্টেশনে। টিকেট কেটে ট্রেনে উঠলাম। যাব আমাদের হোটেলে। হোটেলের নাম ‘দি ক্লারমন্ট হোটেল’। পাশেই সুন্দর একটি মাঠ আছে। একটি সুন্দর মসজিদও আছে। বিখ্যাত মোস্তফা সেন্টার থেকে খুব কাছে আমাদের হোটেল।

সিঙ্গাপুর খুব সুন্দর ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। কোথাও ময়লা নেই। যানজট নেই। সবাই খুব নিয়মকানুন মানে। সিগন্যাল না পড়লে কেউ রাস্তা পারাপার হয় না। লাল বাতি জ্বললে গাড়ি থেমে যায়। সবুজ বাতি জ্বললে আবার চলতে শুরু করে। আমরাও নিয়ম মেনে রাস্তা পারাপার হয়েছি। ময়লা-আবর্জনা ডাস্টবিনে ফেলেছি। যেখানে-সেখানে ময়লা ফেললে জরিমানা করা হয়।

সিঙ্গাপুরে আমরা অনেক কিছু দেখেছি। আমরা মানে- বাবা, আম্মু আর আমার ছোট বোন রাইদা। রাইদা ক্লাস ওয়ানে পড়ে। ও অনেক দুষ্টু। সিঙ্গাপুরের জুরং বার্ড পার্ক অনেক সুন্দর। নানা রঙের পাখি আছে এখানে। সাপ, ব্যাঙ, পেঙ্গুইন, বকসহ বিভিন্ন অদ্ভুত ধরনের প্রাণী দেখেছি আমরা। খোলা ট্রামে করে পুরো পার্কে চক্করও দিয়েছি।

সিঙ্গাপুরের বোটানিক গার্ডেন আরো বেশি সুন্দর। বিশাল এই পার্কে অনেক গাছ আছে। এখানকার অর্কিড গার্ডেন ঘুরে আমরা খুব মজা পেয়েছি! বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে অর্কিড গাছ দেখে অবাক ও আনন্দিত দুটিই হয়েছি। পৃথিবীর সব বিখ্যাত মানুষের নামে গাছ আছে এই গার্ডেনে। অনেক বাংলাদেশি এখানে কাজ করেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।

সিঙ্গাপুরের আরেকটি সুন্দর জায়গা সেন্টোসা আইল্যান্ড। পৃথিবী বিখ্যাত ইউনিভার্সাল স্টুডিও, সমুদ্রের নিচে মাছের জগৎ সি অ্যাকুরিয়াম, সিলোসো বিচ ও পালোয়ান বিচ আমরা ঘুরে ঘুরে দেখেছি! খোলা ট্রামে করে এক বিচ থেকে আরেক বিচে ঘুরেছি। কোনো টাকা লাগে না! যেখানে খুশি নামা যায় আবার ওঠাও যায়। পৃথিবী বিখ্যাত ম্যাকডোনাল্ডসে আমরা দুপুরে খেয়েছি। ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে থালির খাবার খেয়ে মজা পেয়েছি খুব।

অর্ধেক মাছ আর অর্ধেক সিংহ দেখতে মারলায়ন স্কয়ারে যাই। পাশেই মেরিনা বে স্যান্ডস, গার্ডেন্স বাই দা বে। আমরা এখানে স্পিডবোটে চড়েছি। এই এলাকাটা রাতের বেলা দেখতে খুব সুন্দর লাগে।

পুরো সিঙ্গাপুর ঘুরে আমরা খুব মজা পেয়েছি। এমআরটি স্টেশন, শপিংমল, পার্ক, রাস্তা সবই খুব সুন্দর, পরিষ্কার-পরিচ্ছিন্ন ও সাজানো-গুছানো।

আমাদের পরবর্তী গন্তব্য মালয়েশিয়া। সিঙ্গাপুর ছেড়ে যেতে খুব খারাপ লাগছে আমার। রাইদার মন বেশি খারাপ। মালয়েশিয়ার গল্প আরেক দিন বলব। লংকাউয়ি, গেন্টিং হাইল্যান্ড, পুত্রজায়া, কুয়ালামপুরের অনেক গল্প আছে।

য় ষষ্ঠ শ্রেণি, ভিকারুননিসা নূন

স্কুল এন্ড কলেজ, বসুন্ধরা শাখা।


বিভাগ:

Author Name

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.