আপনি কি একজন ব্যক্তিত্ববান পুরুষ? আপনার ব্যক্তিত্বের প্রশংসায় আপনার আশেপাশের সবাই পঞ্চমুখ? তাহলে জেনে নিন যে আপনার এই ব্যক্তিত্বের কারণেই আপনি হারাতে পারেন আপনার জীবন সঙ্গী কিংবা প্রেমিকাকে! আপনি চমৎকার ব্যক্তিত্ব, রুচিশীলতা, যত্নশীল স্বভাব ইত্যাদি সব দারুণ বিষয় গুলোই হয়ে উঠতে পারে অনেক নারীর চোখেই রীতিমত চক্ষুশূল!
শুনতে অদ্ভুত শোনালেও একথা সত্যি যে অনেক নারীই পছন্দ করেন ব্যক্তিত্বহীন পুরুষদের। ব্যক্তিত্বহীন পুরুষদের মধ্যে থাকা কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে এই পছন্দের বিষয়টি গড়ে উঠতে দেখা যায়। মুখে মুখে যতই অস্বীকার করুন না কেন,মনে মনে অনেক নারীই অস্বীকার করতে পারবেন না যেন এমন পুরুষই তাদের অধিক পছন্দ। কেননা একজন ব্যক্তিত্বহীন পুরুষকে প্রেমিক বা স্বামী হিসাবে পাওয়ার মাধ্যমে তারা এমন কিছু সুবিধা ভোগ করে থাকেন, সেগুলো ব্যক্তিত্ববান পুরুষের মাঝে মিলবে না।
ব্যাপারটি কতখানি ভুল বা কতখানি শুদ্ধ, সেই হিসাবে না গিয়ে আসুন জেনে নেয়া যাক নারীদের ব্যক্তিত্বহীন পুরুষ পছন্দ করার পেছনে ৫টি মূল কারন সম্পর্কে।
কর্তৃত্ব ফলানো যায়
বেশিরভাগ নারীই সম্পর্কের ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব ফলাতে চায়। তারা চায় সম্পর্কটি পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকুক, যদিও একই সাথে এটাও চায় যে ব্যাপারটি তার পুরুষ সঙ্গী বুঝতে না পারুক। আর এই চাহিদার কারণেই তারা ব্যক্তিত্বহীন পুরুষদেরকে পছন্দ করে। কারণ ব্যক্তিত্বহীন পুরুষরা সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই কর্তৃত্ব নিতে পারে না, স্ত্রী কিংবা প্রেমিকার উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয় তারা। স্ত্রী ও প্রেমিকার অনুমতি ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার সাহস পায় না এ ধরণের পুরুষরা। ফলে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব পুরোপুরিই নারীর হাতে থাকে যা নারীরা বেশ উপভোগ করে।
সময় ও সঙ্গ পাওয়া যায় অধিক
অধিকাংশ ব্যক্তিত্বহীন পুরুষদেরই বন্ধু কিংবা সামাজিক পরিধি কম হয়। অন্যদিকে দেখা যায় পছন্দের নারীকে পেলে তারা এতটাই সন্দেহ করার প্রবনতা কিংবা হারানোর ভয়ে ভোগেন যে এক মুহূর্তও প্রেমিকা/স্ত্রীকে একলা রাখতে রাজি হন না। ফলে তাদের বেশিরভাগ সময়টা কাটে প্রেমিকা বা স্ত্রীকে নিয়ে আর অনেক নারীই এটা খুব পছন্দ করেন। বলা যায় নিজের ব্যক্তিত্বহীনতা থেকেই তৈরি হয় এক রকমের অনিরাপত্তার বোধ, ফলে সম্পর্কে একটা স্বাস্থ্যকর দূরত্বে তারা বিশ্বাস করেন না। অনেক ক্ষেত্রেই ধরণের পুরুষরা প্রয়োজনে নিজের গুরুত্বপূর্ন কাজ বাদ দিয়ে হলেও স্ত্রী কিংবা প্রেমিকাকে সঙ্গ দিয়ে থাকেন। আর বলাই বাহুল্য যে অনেক নারীই এটা খুব উপভোগ করেন।
দোষারোপ করা যায়
ব্যক্তিত্বহীন পুরুষদের উপর প্রেমিকা বা স্ত্রীরা নিজের দোষ চাপিয়ে দিতে পারে সহজেই। নিজে যতই দোষ করুক না কেন, দিন শেষে সকল কাজের দায়ভার পুরুষ সঙ্গীর ওপর চাপিয়ে দেয়া যায়।। ব্যক্তিত্ববান একজন পুরুষর স্বভাবতই নিজের দোষ না থাকলে এই দায়ভার নেবেন না। কিন্তু অনেক সময়েই ব্যক্তিত্বহীন পুরুষরা সকল দোষ নিজের কাঁধে নিয়ে নেয়। এক্ষেত্রে কাজ করে খানিকটা হারাবার ভয়, আর অনেক খানিই নিজের দুর্বল ব্যক্তিত্ব। ঢেকে রাখার মতন অসংখ্য দোষ ত্রুটি আছে এই ধরনের নারীরা তাই ব্যক্তিত্ববান পুরুষের চাইতে ব্যক্তিত্বহীন পুরুষকেই বেশি পছন্দ করে থাকে সঙ্গী হিসাবে।
পরিবারের চাইতে বেশি গুরুত্ব পাওয়া যায়
সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্ত্রী ও বাবা-মা কে সমান গুরুত্ব না দিলে সম্পর্ক সুন্দর রাখা কঠিন ব্যাপার। এক্ষেত্রে দুপক্ষের মধ্যেই একটি সমতা বজায় রাখা জরুরী। কিন্তু অধিকাংশ পুরুষই হয় খুব বেশি বাবা-মা ঘেঁষা অথবা অতিরিক্ত বৌ ঘেঁষা হয়। আর এই বৌ-ঘেঁষা স্বভাবের ব্যক্তিত্বহীন পুরুষদেরকে নারীরা বেশি ভালোবাসেন। সত্যি বলতে কি, অধিকাংশ নারীই চান তাদের স্বামী শুধু তাকে নিয়েই থাকবেন এবং তার পরিবারকে নিজের পরিবারের চাইতেও অনেক বেশি গুরুত্ব দেবেন। ব্যক্তিত্বহীন পুরুষদের কাছ থেকে এটা সহজেই মেলে। ব্যক্তিত্বহীন পুরুষেরা নিজের মা-বাবা, পরিবারকে পাশে ঠেলে স্বার্থপরের মতন কেবল বউ বা প্রেমিকা নিয়ে থাকেন। আর বিয়ের ক্ষেত্রে অনেক নারীই ব্যক্তিত্ববান পুরুষদের চাইতে ব্যক্তিত্বহীন বৌ-ঘেঁষা স্বভাবের পুরুষদেরকে বেশি ভালোবাসেন।
প্রতারণা করতে সুবিধা হয়
ব্যক্তিত্বহীন পুরুষদের সাথে প্রতারণা করা বেশ সহজ। এ ধরণের পুরুষদের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়েই নারীরা এক রকম একঘেয়েমীতে ভোগে এবং পরবর্তিতে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। আর স্ত্রীর প্রতি অন্ধ ভক্তির কারণে পরকীয়ার বিষয়টি অনেক পুরুষ আঁচও করতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে স্ত্রী পরকীয়া করছে জানতে পারলে পুরো ব্যাপারটিকে নিজের ব্যর্থতা হিসেবে মেনে নেয় তারা। তাই কিছুটা প্রতারক ধরণের নারীরা ব্যক্তিত্বহীন পুরুষের সঙ্গ বেশি পছন্দ করে।