সম্প্রতি গবেষকেরা খুঁজে পেয়েছেন এযাবতকালে প্রাপ্ত পৃথিবীর সবচাইতে পুরনো শুক্রাণু। ১৭ মিলিয়ন বছর ধরে প্রায় অবিকৃত থাকা এই শুক্রাণু কোথায় পাওয়া গেছে জানেন? কয়েক টন বাদুড়ের বিষ্ঠার নিচে চাপা পড়া অবস্থায়। আর এই শুক্রাণু কোন প্রাণীর? না, মানুষের নয়। এই শুক্রাণু পাওয়া যেত এক প্রজাতির চিংড়ীর পুরুষ ও নারী উভয়ের শরীরে!
কোথায় পাওয়া গেলো এই প্রাচীন শুক্রাণু? আসলে এই বাদুড়ের বিষ্ঠা পাওয়া যায় অনেক আগে, ১৯৮৮ সালে। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটির মাইক আর্চার এবং তার গবেষক দল কুইন্সল্যান্ডের এক গুহায় খনন শুরু করেন। চিংড়ী জাতীয় বিভিন্ন প্রাণীর ফসিল সেখানে বাদুড়ের বিষ্ঠার নিচে চাপা পড়ে ছিলো। অ্যাসিড ব্যবহার করে আস্তে আস্তে সেগুলোকে আলাদা করা শুরু করা হয়। এখান থেকে যেসব তলানি পাওয়া যায় সেগুলো আবার ২০০৯ সালে জন নীল নামের এক গবেষক নিয়ে যান ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করবার জন্য। এই তলানির মাঝে তিনি খুঁজে পান ৮০০’র ও বেশি অস্ট্রাকড।
অস্ট্রাকড হলো চিংড়ী জাতীয় এক ধরণের প্রাণী। তবে আমরা সচরাচর যে ধরণের চিংড়ী খেয়ে থাকি তেমন নয় মোটেই। নীল যেসব অস্ট্রাকড খুঁজে পান সেগুলো একেবারেই ক্ষুদ্র। অনেকটা ছারপোকার মতো ছোট্ট আকৃতির। এদের শরীরের গঠন পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে যান নীল। তিনি ইউনিভার্সিটি অফ মিউনিখের একজন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন। রেনে মাৎসে-কারাজ নামের এই বিশেষজ্ঞের সাথে মিলে তিনি আবিষ্কার করেন বিশাল আকৃতির এসব শুক্রাণু।
কেন বিজ্ঞানীরা এসব শুক্রাণু দেখে এতো ভড়কে গেছেন? কতো বড় এগুলো। প্যাঁচ খোলার পর দেখা যায়, চিংড়ীর শরীর যত বড়, এর শুক্রাণুর আকারও মোটামুটি একই সমান! একটা প্রাণীর শুক্রাণু যদি তার সমান বড় হয়ে থাকে, তবে পরিস্থিতি কেমন হবে? মানুষের ক্ষেত্রে এই অবস্থা হলে কি হতো ভাবুন তো একবার? অথবা হাতির মতো বড় প্রাণীর ক্ষেত্রে? ব্যাপারটা এমন অস্বাভাবিক হবার কারনেই এই গবেষণা প্রকাশিত হবার পর বেশ উৎসাহিত হয়ে উঠেছেন বিজ্ঞানীরা।