জনাব আখলাকুর রহমান একজন ব্যাংকার। চেয়ারে বসেই অফিসে কাজ করতে হয়। মাঝে মধ্যে কোমরে ব্যথা অনুভব করেন, আবার এমনিতেই সেরে যায়। একসময় এ ব্যথা মারাত্মক আকারে দেখা দিল এবং মাঝেমধ্যেই পায়ের দিকে নেমে আসে। তিনি মনে করলেন এ সমস্যা কিডনিজনিত। পরামর্শ করলেন একজন কিডনি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে, ইতিহাস শুনে বুঝতে পারলেন এটি কিডনিজনিত সমস্যা নয়। কোমরের ডিস্কের সমস্যা। নার্ভের চাপের মাধ্যমে ব্যথা পায়ে চলে এসেছে।
আখলাক সাহেবের মতো আমাদের দেশে অনেক রোগী আছেন যারা জানেন না, কোনটি কোমর ব্যথা এবং কোনটি কিডনিজনিত ব্যথা। কোমর ব্যথার বেশির ভাগ রোগী মনে করেন তাদের কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। কিছু তথ্য ও উপসর্গ জানা থাকলে রোগীরা নিজেই জানতে পারবেন ব্যথার উৎস কোথায়।
কিডনি রোগের উপসর্গ বা ব্যথা
* কিডনিজনিত ব্যথা সাধারণত মেরুদণ্ড থেকে একটু দূরে ডান বা বামপাশে হয়। এটি পেছনের পাঁজরের নিচের অংশে অনুভূত হয়। এই ব্যথা নাড়াচাড়া করে এবং কোমরের দুই পাশেও যেতে পারে কিংবা পেছনের নরম জায়গায় গ্রোয়িনে অনুভূত হতে পারে।
* রোগী নিজেকে অসুস্থ এবং দুর্বল মনে করবেন, মাঝে মাঝে বমি বমি ভাব হবে ।
* জ্বর জ্বর ভাব অনুভূত হবে এবং দেহের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যেতে পারে।
* প্রস্রাব ঘোলাটে হয়, সঙ্গে দুর্গন্ধ থাকবে।
* প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি প্রস্রাব হবে।
কোমর ব্যথা বোঝার উপায়
* কোমর ব্যথা সাধারণত মাংসপেশি, হাড়, ডিস্ক, জয়েন্ট ও নার্ভ সম্পর্কিত ।
* এটি নির্দিষ্ট অংশে হয়ে থাকে ।
* মেরুদণ্ডের নড়াচড়া যেমন ওঠাবসা, সামনে ঝোঁকা, হাঁটা বা দাঁড়ানো, অনেকক্ষণ ধরে কাজ করা বা শুয়ে থাকার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, কোমরে ব্যথা নড়াচড়ার সঙ্গে বাড়বে, কমবে।
* সাধারণত এই ব্যথায় জ্বর হয় না (তবে কোনো রোগের কারণে কোমর ব্যথা হলে জ্বর আসতে পারে, যেমন- মেরুদণ্ডে টিউমার) এ ব্যাপারে রোগীরা সাধারণত নিজেকে দুর্বল মনে করেন না।
* সাধারণত কোমর ব্যথা ওষুধ সেবনে ভালো হয়; বন্ধ করলে ব্যথা আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে।
যখন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়
* কোমর ব্যথার রোগীর বয়স ১০-এর নিচে এবং ৫১ বছরের উপরে হলে
* ওজন হঠাৎ অস্বাভাবিক কমে গেলে ।
* ব্যথার ওষুধ অনেক খাওয়ার পরও না কমলে ।
* প্রস্রাব-পায়খানা ধরে রাখতে না পারলে বা কষ্ট হলে।
* কোমর ব্যথা পায়ে নেমে এলে এবং তা ঝিন ঝিন, ভারি ভারি, অবশ অবশ, জ্বালা-পোড়া এবং পা দুর্বল ভাব অনুভূত হলে ।
* ব্যথার জন্য রাতে ঘুমের অসুবিধা হলে ।
গবেষণায় দেখা গেছে আমাদের দেশে শতকরা প্রায় ত্রিশ ভাগ রোগীর কিডনির সমস্যা হয়েছে ব্যথার ওষুধ সেবনের জন্য। বলা হয় কিডনি অকার্যকর হওয়ার জন্য একটা ব্যথার ওষুধই যথেষ্ট। ব্যথার ওষুধ ছাড়াও কিন্তু ব্যথা নিরাময় সম্ভব, এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ম্যানুয়াল ও ম্যানুপুলেশন থেরাপি। মেরুদণ্ডসহ শরীরের অন্যান্য জয়েন্টের ব্যথা নিরাময়ে এটি বেশ কার্যকর এবং বাংলাদেশেও এই চিকিৎসা প্রচলিত আছে।
ডা. মো. শাহাদৎ হোসেন
লেখক : কন্সালটেন্ট-পুপলার মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, ধানমন্ডি-২, ঢাকা
ফোন-০১৭১৫৪৫১৫২৫
আখলাক সাহেবের মতো আমাদের দেশে অনেক রোগী আছেন যারা জানেন না, কোনটি কোমর ব্যথা এবং কোনটি কিডনিজনিত ব্যথা। কোমর ব্যথার বেশির ভাগ রোগী মনে করেন তাদের কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। কিছু তথ্য ও উপসর্গ জানা থাকলে রোগীরা নিজেই জানতে পারবেন ব্যথার উৎস কোথায়।
কিডনি রোগের উপসর্গ বা ব্যথা
* কিডনিজনিত ব্যথা সাধারণত মেরুদণ্ড থেকে একটু দূরে ডান বা বামপাশে হয়। এটি পেছনের পাঁজরের নিচের অংশে অনুভূত হয়। এই ব্যথা নাড়াচাড়া করে এবং কোমরের দুই পাশেও যেতে পারে কিংবা পেছনের নরম জায়গায় গ্রোয়িনে অনুভূত হতে পারে।
* রোগী নিজেকে অসুস্থ এবং দুর্বল মনে করবেন, মাঝে মাঝে বমি বমি ভাব হবে ।
* জ্বর জ্বর ভাব অনুভূত হবে এবং দেহের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যেতে পারে।
* প্রস্রাব ঘোলাটে হয়, সঙ্গে দুর্গন্ধ থাকবে।
* প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি প্রস্রাব হবে।
কোমর ব্যথা বোঝার উপায়
* কোমর ব্যথা সাধারণত মাংসপেশি, হাড়, ডিস্ক, জয়েন্ট ও নার্ভ সম্পর্কিত ।
* এটি নির্দিষ্ট অংশে হয়ে থাকে ।
* মেরুদণ্ডের নড়াচড়া যেমন ওঠাবসা, সামনে ঝোঁকা, হাঁটা বা দাঁড়ানো, অনেকক্ষণ ধরে কাজ করা বা শুয়ে থাকার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, কোমরে ব্যথা নড়াচড়ার সঙ্গে বাড়বে, কমবে।
* সাধারণত এই ব্যথায় জ্বর হয় না (তবে কোনো রোগের কারণে কোমর ব্যথা হলে জ্বর আসতে পারে, যেমন- মেরুদণ্ডে টিউমার) এ ব্যাপারে রোগীরা সাধারণত নিজেকে দুর্বল মনে করেন না।
* সাধারণত কোমর ব্যথা ওষুধ সেবনে ভালো হয়; বন্ধ করলে ব্যথা আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে।
যখন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়
* কোমর ব্যথার রোগীর বয়স ১০-এর নিচে এবং ৫১ বছরের উপরে হলে
* ওজন হঠাৎ অস্বাভাবিক কমে গেলে ।
* ব্যথার ওষুধ অনেক খাওয়ার পরও না কমলে ।
* প্রস্রাব-পায়খানা ধরে রাখতে না পারলে বা কষ্ট হলে।
* কোমর ব্যথা পায়ে নেমে এলে এবং তা ঝিন ঝিন, ভারি ভারি, অবশ অবশ, জ্বালা-পোড়া এবং পা দুর্বল ভাব অনুভূত হলে ।
* ব্যথার জন্য রাতে ঘুমের অসুবিধা হলে ।
গবেষণায় দেখা গেছে আমাদের দেশে শতকরা প্রায় ত্রিশ ভাগ রোগীর কিডনির সমস্যা হয়েছে ব্যথার ওষুধ সেবনের জন্য। বলা হয় কিডনি অকার্যকর হওয়ার জন্য একটা ব্যথার ওষুধই যথেষ্ট। ব্যথার ওষুধ ছাড়াও কিন্তু ব্যথা নিরাময় সম্ভব, এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ম্যানুয়াল ও ম্যানুপুলেশন থেরাপি। মেরুদণ্ডসহ শরীরের অন্যান্য জয়েন্টের ব্যথা নিরাময়ে এটি বেশ কার্যকর এবং বাংলাদেশেও এই চিকিৎসা প্রচলিত আছে।
ডা. মো. শাহাদৎ হোসেন
লেখক : কন্সালটেন্ট-পুপলার মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, ধানমন্ডি-২, ঢাকা
ফোন-০১৭১৫৪৫১৫২৫