মনে হতে পারে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো দুশ্চিন্তা। জীবন সব সময় আমাদের ইচ্ছে মতো যায় না, এ কারণে সময়ে অসময়ে দুশ্চিন্তায় পড়তে হয় সবাইকেই। কিন্তু কেউ কেউ আছেন যারা অনিচ্ছাসত্ত্বেও প্রায় সর্বক্ষণই দুশ্চিন্তায় ভুগে থাকেন। অন্যদের চাইতে বেশি দুশ্চিন্তা করার কারণে তাদের জীবনে এমন কিছু সমস্যা দেখা যায় যেসব সমস্যা অন্যরা ভোগ করেন না। দুশ্চিন্তা যখন মানসিক জটিলতায় রূপ নেয় তখন এসব সমস্যা আরও প্রকট রূপ ধারণ করে।
১) “মাথা ঠাণ্ডা” করা খুবই কঠিন একটি কাজ
কেউ রেগে গেলে বা দুশ্চিন্তায় অস্থির হলে আমরা তাকে বলি “মাথা ঠাণ্ডা করো!” কিন্তু একজন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষের জন্য এই কথাটা যে কতটা বিরক্তিকর, তা অন্য কারও বোঝার উপায় নেই। কারণ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষের পক্ষে মাথা ঠাণ্ডা করাটা প্রায় সময়েই অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তখন কেউ মাথা ঠাণ্ডা করতে বললে উল্টো মাথা গরম হয়ে যায় তাদের।
এ কাজ না করে বরং তাদের দুশ্চিন্তার কারণ বুঝে তাদেরকে সমর্থন দেওয়া উচিত যতটা সম্ভব, এভাবেই তাদের দুশ্চিন্তা কমিয়ে আনা সম্ভব।
এ কাজ না করে বরং তাদের দুশ্চিন্তার কারণ বুঝে তাদেরকে সমর্থন দেওয়া উচিত যতটা সম্ভব, এভাবেই তাদের দুশ্চিন্তা কমিয়ে আনা সম্ভব।
২) অসময়ে দেখা যায় প্যানিক অ্যাটাক
সুন্দর একটি দিন, আপনি ফিটফাট হয়ে বাসা থেকে বের হচ্ছেন, এমন সময়ে এলো একটি ফোন কল, অথবা চিঠির বাক্সে খুজে পেলেন একটি খারাপ খবর। মুহূর্তের মাঝে আপনার মেজাজের আকাশে মেঘ জমে যাবে, সুন্দর একটি দিন মুহূর্তেই হয়ে যাবে ধ্বংস।
কিন্তু এ সমস্যাগুলো অন্যরা কেউ বুঝতে চান না একেবারেই। এ কারণে বিপদে পড়ে থাকেন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত এসব মানুষ এবং তাদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়তে থাকে।
কিন্তু এ সমস্যাগুলো অন্যরা কেউ বুঝতে চান না একেবারেই। এ কারণে বিপদে পড়ে থাকেন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত এসব মানুষ এবং তাদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়তে থাকে।
৩) অযাচিত শারীরিক উপসর্গ দেখা দেওয়াটা অস্বাভাবিক নয়
দুশ্চিন্তা কি শুধুই মানসিক ব্যাপার? বরং শারীরিক কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে যা খুবই অসুবিধাজনক। অনেকের দেখা দিতে পারে ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম। অনেকের ক্ষেত্রে শরীরে উঠতে পারে র্যাকশ, মুখ শুকিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে মাথা ঘোরার মতো সমস্যাগুলো হতে পারে।
৪) ভয় হয়ে ওঠে আরও বেশি ভয়ংকর
দুশ্চিন্তায় থাকা মানুষের ভয় অতি মাত্রায় বেড়ে যায়। আর এই ভয় সহজে দূর হতেও চায় না। যে কোন অনিশ্চিত পরিবেশে এই ভয় প্রায় অবশ করে দিতে পারে একজন মানুষকে।
৫) দুশ্চিন্তা আর স্ট্রেস এক নয়
আপনি কাউকে বললেন আপনি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। তারা ধরেই নেবে আপনি কোনো কারনে স্ট্রেসে আছেন এবং এ কারনেই আপনার দুশ্চিন্তা। তারা আপনাকে সাহাজ্য করার চেষ্টা করবে, আপনার প্রতি সহমর্মিতা দেখাবে। স্ত্রেসে থাকা মানুষের ক্ষেত্রে এই সহমর্মিতা কাজ করলেও, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষের ক্ষেত্রে তা ভালোর চাইতে খারাপ করে বেশি। এক্ষেত্রে সহমর্মিতা দেখাতে গিয়ে অন্য মানুষটিও দুশ্চিন্তায় পড়ে যেতে পারে এবং আপনার দুশ্চিন্তা তখন আরও বেড়ে যায়।
৬) অতিরিক্ত চিন্তায় ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন আপনি
দুশ্চিন্তার মাধ্যমে তৈরি হয় এক দুষ্টচক্র। আপনি যা চিন্তা করছেন, তা দুশ্চিন্তায় রুপান্তরিত হচ্ছে এবং এই দুশ্চিন্তা নিয়েই আপনার মাথা ভারি হয়ে থাকছে সর্বক্ষণ। এতে দেখা দিতে পারে দীর্ঘস্থায়ী বিষণ্ণতার মত জটিল মানসিক সমস্যা।