যখনই অসম্ভবকে সম্ভব করার বিষয় এসে দাঁড়ায় ঠিক তখনই একটি নাম মনের দরজায় কড়া নাড়ে। কারও কাছে তিনি দুর্ধর্ষ অ্যাকশন হিরো, কারও কাছে বাংলার বন্ড, আবার কারও কাছে ‘ফেস অফ বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি’। এই নায়ক আর কেউ নন, আমাদের প্রিয় নায়ক অনন্ত জলিল। সম্প্রতি তিনি তার পরিশ্রমী জীবনের নানা অজানা গল্প শুনিয়েছেন যুগান্তরকে। সঙ্গে ছিলেন- এফ আই দীপু
একবিংশ শতাব্দীর ঢাকার আধুনিক চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ বলা হয় তাকে। নির্মাণে আধুনিকতা, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, বিদেশী চমকপ্রদ লোকেশনে শুটিং, সর্বোপরি সবচেয়ে বড় বাজেটের জোগানদাতা- সবকিছুতেই জড়িয়ে আছে অনন্ত জলিলের নাম। আপাদমস্তক চলচ্চিত্রমনা এই মানুষটির অন্য একটি পরিচয় আছে। একজন ব্যবসায়ী। বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর সিআইপি। শতভাগ রফতানিমুখী তৈরি পোশাকের এই ব্যবসা নিয়ে দারুণ ব্যস্ত তিনি। পাশাপাশি চলছে চলচ্চিত্র নির্মাণ। এই দুই গোলার্ধের কাজ শক্ত হাতে দক্ষ কাণ্ডারির মতো সামলে নেন। পেয়েছেন অভাবনীয় সফলতা। তার ডায়রির পাতায় ‘পরাজয়’ বলতে কোনো শব্দ নেই। কীভাবে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে এসেছেন সেই গল্পই তিনি শুনিয়েছেন তার অফিসে বসে। শুনিয়েছেন জীবনের নানা বাঁকের গল্প।
গল্পের শুরুতেই বলে রাখা ভালো- চিত্রনায়ক ছাড়াও একটি টেলিকম কোম্পানির মডেল হয়ে দেশ কাঁপিয়েছেন অনন্ত। সেই বিজ্ঞাপনে অনন্তের একটি সংলাপ দর্শকদের মুখে মুখে। তা হল, ‘অসম্ভবকে সম্ভব করাই অনন্তের কাজ’। সম্প্রতি তিনি নতুন একটি বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন। তাতেও থাকছে চমক। উল্লেখ্য, যমুনা গ্র“প দেশে প্রথমবারের মতো নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত মোটরবাইক বাজারজাত করছে। তারই বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল। কাজটি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যমুনা গ্র“পের সম্মানিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম ভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় এবং সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। অনেক দিন ধরেই কথা হচ্ছিল যমুনা ইলেক্ট্রনিক্সের সঙ্গে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে আমার সম্পৃক্ততার ব্যাপারে। তারপরই যমুনা ইলেক্ট্রনিক্সের পণ্য ‘পেগাসাস’ মোটরবাইকের বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয় এবং যথারীতি চুক্তি স্বাক্ষর হল। ইতিমধ্যে এই বিজ্ঞাপনের শুটিং সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই সব টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার হবে ‘পেগাসাস’ মোটরবাইকের বিজ্ঞাপন। এ প্রসঙ্গে অনন্ত বলেন, ‘পেগাসাস’ মোটরবাইকের বিজ্ঞাপনটি দেখার পর চমকে উঠবেন দেশের দর্শক। সবাইকে বলতেই হবে দেখার মতো একটি কাজ হয়েছে পেগাসাস মোটরবাইকের বিজ্ঞাপনটিতে। যার মাঝে দর্শকরা খুঁজে পাবেন নতুনত্ব।’
এবার অনন্ত তার চলচ্চিত্র জীবনের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন। কথার ভিতর দিয়ে উঠে এলো ‘খোঁজ দ্য সার্চ’ থেকে আজকের ‘মোস্টওয়েলকাম-২’- কীভাবে দীর্ঘ পাঁচটি বছর অতিক্রম করেছেন। প্রশ্নের অবতারণার কোনো প্রয়োজন হয়নি। মনের অজান্তেই অকপটে বলে যাচ্ছিলেন অনন্ত, ‘সংকট এসেছে। মানুষের মধ্যে দীনতা দেখেছি। রুগ্ণ দশা একটি শিল্পকে টেনে তুলতে চেয়েছিলাম। আমি একা পারব না। একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সহযোগিতা চেয়েছিলাম সবার। অনেকেই উৎসাহ দিয়েছেন। তবে বেশির ভাগই প্রতারণার জন্য ওঁত পেতে বসেছিল। হোঁচট খেয়েছি। তবে থমকে যাইনি। আমার নীতিই এমন। হার মানতে শিখিনি। আজকে পারিনি তো কী হয়েছে। কাল অবশ্যই পারব। আমি কিন্তু পেরেছি। দেখিয়ে দিয়েছি- কীভাবে আধুনিক রুচিসম্পন্ন দর্শক হলে আনতে হয়। একমাত্র আমার ছবি দেখার জন্য দর্শক হলমুখী হয়েছেন। এটা সম্ভব হয়েছে আমার আত্মবিশ্বাসের কারণে। মনে রাখা উচিত যে কোনো ভালোর সমালোচনা থাকবেই। এটা যারা মেনে নিতে পারবেন তারাই সফল হবেন। হোঁচট না খেলে তো কখনোই শেখা সম্ভব নয়। আর সম্যক জ্ঞান না থাকলে কখনোই উন্নতির শিখরে পৌঁছানো সম্ভব নয়।’
অভিযোগ-অনুযোগ সবকিছু ছাপিয়ে অনন্ত আজ একজন সফল ব্যক্তি। এই সফলতার পেছনে কী কোনো লুকানো গল্প রয়েছে? যদি থাকে অনন্ত কী জানাবেন সেই লুকানো গল্পের কথা? হাসিমুখেই উত্তর দিলেন, ‘আসলে আমার সফলতার পেছনে কোনো লুকানো গল্প নেই। পুরোটাই আমার পরিশ্রম। অনেকেই অনেক কিছু বলতে পারেন কিংবা ভাবতে পারেন। এটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। আমি একজন গার্মেন্ট ব্যবসায়ী। পাশাপাশি আমি একজন চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আল্লাহতায়ালার অশেষ রহমত আছে বলেই আমি সফল। আমার এই সফলতার মূল চালিকাশক্তি আমার সততা, ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম, নিয়মানুবর্তিতা, লক্ষ্য এবং সর্বোপরি কাজের প্রতি আমার ডেডিকেশন।’ একজন মানুষের পক্ষে কীভাবে এতটা পরিশ্রম করা সম্ভব! মাঝে মাঝে অনন্তকে দেখলে সত্যিই অবাক হতে হয়। সব পরিচয় বাদ দিলেও তিনি একজন মানুষ। প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিতেই আবারও তার ঠোঁটের কোণে লুকিয়ে থাকা হাসি প্রসারিত করলেন। বললেন, ‘আমি আমার প্রতিটি মুহূর্তকেই কাজে লাগাই। যেমন এখনও আমি ফ্যাক্টরিতে যাওয়ার পর কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আমার রুমে যাই না। প্রথমে সব ফ্লোর ঘুরে দেখি। শ্রমিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলি। কাজের অগ্রগতি, তাদের সমস্যা নিজে শোনার চেষ্টা করি। এভাবেই প্রতিনিয়ত আমি কঠোর পরিশ্রম করি। কারণ পরিশ্রম করা থেকে নিজেকে বিরত রাখা মানে সফলতা থেকে দূরে থাকা।’ অকাট্য যুক্তি বটে। সত্যিই তো, পরিশ্রম না করলে সফলতা কোত্থেকে আসবে? কিন্তু সাড়ে পাঁচ হাজার শ্রমিক সামলানো তো চাট্টিখানি কথা নয়! কীভাবে সম্ভব? জানালেন অনন্ত- ‘আমার ফ্যাক্টরিতে কখনোই কোনো শ্রমিক অসন্তোষ হয়নি। আশা করি ভবিষ্যতেও হবে না। শ্রমিকদের পাশে থেকে ভালোবাসা দিয়ে বোঝাতে চেষ্টা করেছি এই ফ্যাক্টরি তাদের। এখানকার নিয়ম হল প্রতি মাসে সর্বপ্রথম শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের বেতন নিয়ে থাকেন। বেতনাদি ছাড়াও কোনো শ্রমিকের আর্থিক বা পারিবারিক বা চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যাপারে সব সময় পাশে থাকার চেষ্টা করি। শ্রমিকদের ভালোবাসা পাওয়াটা কিন্তু আমার আরেকটি সফলতা।’
এত বড় ব্যবসা পরিচালনার ব্যস্ততার পাশাপাশি কীভাবে সামলাচ্ছেন চলচ্চিত্রের কাজ? এবার কিছুটা ভাবনায় পড়লেন। উত্তরটা ছিল যৌক্তিক। বলেছেন, ‘সামলে নিচ্ছি। এটা আসলে মনের খোরাক। সিনেমার সঙ্গে একেবারেই মিশে গেছি। ব্যবসা এবং চলচ্চিত্র দুটোর জন্য আমি আলাদাভাবে সময় নির্ধারণ করি। একটা সেকেন্ড সময় আমি নষ্ট করতে নারাজ। সিনেমা করতে গিয়ে আমার ব্যবসার ওপর যেন কোনো প্রভাব না পড়ে তার জন্যই আমি প্রতিটি মুহূর্তকেই ব্যবহার করি।’
চলচ্চিত্র নিয়ে অনন্তর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? ভাবনার রেশটা আরও একটু প্রসারিত হল। ভ্রু-কুঁচকে জবাব দিলেন, ‘চলচ্চিত্র নিয়ে এতদিন যে স্বপ্ন দেখেছি তা সার্থক হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ, রফতানির দ্বার উন্মোচন, শিক্ষিত ইয়াং জেনারেশনকে হলমুখী করা- এসবই সম্ভব হয়েছে আমার প্রতি দর্শক-ভক্তদের ভালোবাসার জন্য। তাই চলচ্চিত্র নিয়ে আমার কিছু পরিকল্পনা তো অবশ্যই রয়েছে। সেটা আগাম বলতে চাই না। সময়ের কাজ সময়েই করব।
একবিংশ শতাব্দীর ঢাকার আধুনিক চলচ্চিত্রের পথিকৃৎ বলা হয় তাকে। নির্মাণে আধুনিকতা, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, বিদেশী চমকপ্রদ লোকেশনে শুটিং, সর্বোপরি সবচেয়ে বড় বাজেটের জোগানদাতা- সবকিছুতেই জড়িয়ে আছে অনন্ত জলিলের নাম। আপাদমস্তক চলচ্চিত্রমনা এই মানুষটির অন্য একটি পরিচয় আছে। একজন ব্যবসায়ী। বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর সিআইপি। শতভাগ রফতানিমুখী তৈরি পোশাকের এই ব্যবসা নিয়ে দারুণ ব্যস্ত তিনি। পাশাপাশি চলছে চলচ্চিত্র নির্মাণ। এই দুই গোলার্ধের কাজ শক্ত হাতে দক্ষ কাণ্ডারির মতো সামলে নেন। পেয়েছেন অভাবনীয় সফলতা। তার ডায়রির পাতায় ‘পরাজয়’ বলতে কোনো শব্দ নেই। কীভাবে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে এসেছেন সেই গল্পই তিনি শুনিয়েছেন তার অফিসে বসে। শুনিয়েছেন জীবনের নানা বাঁকের গল্প।
গল্পের শুরুতেই বলে রাখা ভালো- চিত্রনায়ক ছাড়াও একটি টেলিকম কোম্পানির মডেল হয়ে দেশ কাঁপিয়েছেন অনন্ত। সেই বিজ্ঞাপনে অনন্তের একটি সংলাপ দর্শকদের মুখে মুখে। তা হল, ‘অসম্ভবকে সম্ভব করাই অনন্তের কাজ’। সম্প্রতি তিনি নতুন একটি বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন। তাতেও থাকছে চমক। উল্লেখ্য, যমুনা গ্র“প দেশে প্রথমবারের মতো নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত মোটরবাইক বাজারজাত করছে। তারই বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল। কাজটি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যমুনা গ্র“পের সম্মানিত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম ভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় এবং সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। অনেক দিন ধরেই কথা হচ্ছিল যমুনা ইলেক্ট্রনিক্সের সঙ্গে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে আমার সম্পৃক্ততার ব্যাপারে। তারপরই যমুনা ইলেক্ট্রনিক্সের পণ্য ‘পেগাসাস’ মোটরবাইকের বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয় এবং যথারীতি চুক্তি স্বাক্ষর হল। ইতিমধ্যে এই বিজ্ঞাপনের শুটিং সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই সব টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার হবে ‘পেগাসাস’ মোটরবাইকের বিজ্ঞাপন। এ প্রসঙ্গে অনন্ত বলেন, ‘পেগাসাস’ মোটরবাইকের বিজ্ঞাপনটি দেখার পর চমকে উঠবেন দেশের দর্শক। সবাইকে বলতেই হবে দেখার মতো একটি কাজ হয়েছে পেগাসাস মোটরবাইকের বিজ্ঞাপনটিতে। যার মাঝে দর্শকরা খুঁজে পাবেন নতুনত্ব।’
এবার অনন্ত তার চলচ্চিত্র জীবনের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন। কথার ভিতর দিয়ে উঠে এলো ‘খোঁজ দ্য সার্চ’ থেকে আজকের ‘মোস্টওয়েলকাম-২’- কীভাবে দীর্ঘ পাঁচটি বছর অতিক্রম করেছেন। প্রশ্নের অবতারণার কোনো প্রয়োজন হয়নি। মনের অজান্তেই অকপটে বলে যাচ্ছিলেন অনন্ত, ‘সংকট এসেছে। মানুষের মধ্যে দীনতা দেখেছি। রুগ্ণ দশা একটি শিল্পকে টেনে তুলতে চেয়েছিলাম। আমি একা পারব না। একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সহযোগিতা চেয়েছিলাম সবার। অনেকেই উৎসাহ দিয়েছেন। তবে বেশির ভাগই প্রতারণার জন্য ওঁত পেতে বসেছিল। হোঁচট খেয়েছি। তবে থমকে যাইনি। আমার নীতিই এমন। হার মানতে শিখিনি। আজকে পারিনি তো কী হয়েছে। কাল অবশ্যই পারব। আমি কিন্তু পেরেছি। দেখিয়ে দিয়েছি- কীভাবে আধুনিক রুচিসম্পন্ন দর্শক হলে আনতে হয়। একমাত্র আমার ছবি দেখার জন্য দর্শক হলমুখী হয়েছেন। এটা সম্ভব হয়েছে আমার আত্মবিশ্বাসের কারণে। মনে রাখা উচিত যে কোনো ভালোর সমালোচনা থাকবেই। এটা যারা মেনে নিতে পারবেন তারাই সফল হবেন। হোঁচট না খেলে তো কখনোই শেখা সম্ভব নয়। আর সম্যক জ্ঞান না থাকলে কখনোই উন্নতির শিখরে পৌঁছানো সম্ভব নয়।’
অভিযোগ-অনুযোগ সবকিছু ছাপিয়ে অনন্ত আজ একজন সফল ব্যক্তি। এই সফলতার পেছনে কী কোনো লুকানো গল্প রয়েছে? যদি থাকে অনন্ত কী জানাবেন সেই লুকানো গল্পের কথা? হাসিমুখেই উত্তর দিলেন, ‘আসলে আমার সফলতার পেছনে কোনো লুকানো গল্প নেই। পুরোটাই আমার পরিশ্রম। অনেকেই অনেক কিছু বলতে পারেন কিংবা ভাবতে পারেন। এটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। আমি একজন গার্মেন্ট ব্যবসায়ী। পাশাপাশি আমি একজন চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আল্লাহতায়ালার অশেষ রহমত আছে বলেই আমি সফল। আমার এই সফলতার মূল চালিকাশক্তি আমার সততা, ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম, নিয়মানুবর্তিতা, লক্ষ্য এবং সর্বোপরি কাজের প্রতি আমার ডেডিকেশন।’ একজন মানুষের পক্ষে কীভাবে এতটা পরিশ্রম করা সম্ভব! মাঝে মাঝে অনন্তকে দেখলে সত্যিই অবাক হতে হয়। সব পরিচয় বাদ দিলেও তিনি একজন মানুষ। প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিতেই আবারও তার ঠোঁটের কোণে লুকিয়ে থাকা হাসি প্রসারিত করলেন। বললেন, ‘আমি আমার প্রতিটি মুহূর্তকেই কাজে লাগাই। যেমন এখনও আমি ফ্যাক্টরিতে যাওয়ার পর কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আমার রুমে যাই না। প্রথমে সব ফ্লোর ঘুরে দেখি। শ্রমিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলি। কাজের অগ্রগতি, তাদের সমস্যা নিজে শোনার চেষ্টা করি। এভাবেই প্রতিনিয়ত আমি কঠোর পরিশ্রম করি। কারণ পরিশ্রম করা থেকে নিজেকে বিরত রাখা মানে সফলতা থেকে দূরে থাকা।’ অকাট্য যুক্তি বটে। সত্যিই তো, পরিশ্রম না করলে সফলতা কোত্থেকে আসবে? কিন্তু সাড়ে পাঁচ হাজার শ্রমিক সামলানো তো চাট্টিখানি কথা নয়! কীভাবে সম্ভব? জানালেন অনন্ত- ‘আমার ফ্যাক্টরিতে কখনোই কোনো শ্রমিক অসন্তোষ হয়নি। আশা করি ভবিষ্যতেও হবে না। শ্রমিকদের পাশে থেকে ভালোবাসা দিয়ে বোঝাতে চেষ্টা করেছি এই ফ্যাক্টরি তাদের। এখানকার নিয়ম হল প্রতি মাসে সর্বপ্রথম শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের বেতন নিয়ে থাকেন। বেতনাদি ছাড়াও কোনো শ্রমিকের আর্থিক বা পারিবারিক বা চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যাপারে সব সময় পাশে থাকার চেষ্টা করি। শ্রমিকদের ভালোবাসা পাওয়াটা কিন্তু আমার আরেকটি সফলতা।’
এত বড় ব্যবসা পরিচালনার ব্যস্ততার পাশাপাশি কীভাবে সামলাচ্ছেন চলচ্চিত্রের কাজ? এবার কিছুটা ভাবনায় পড়লেন। উত্তরটা ছিল যৌক্তিক। বলেছেন, ‘সামলে নিচ্ছি। এটা আসলে মনের খোরাক। সিনেমার সঙ্গে একেবারেই মিশে গেছি। ব্যবসা এবং চলচ্চিত্র দুটোর জন্য আমি আলাদাভাবে সময় নির্ধারণ করি। একটা সেকেন্ড সময় আমি নষ্ট করতে নারাজ। সিনেমা করতে গিয়ে আমার ব্যবসার ওপর যেন কোনো প্রভাব না পড়ে তার জন্যই আমি প্রতিটি মুহূর্তকেই ব্যবহার করি।’
চলচ্চিত্র নিয়ে অনন্তর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? ভাবনার রেশটা আরও একটু প্রসারিত হল। ভ্রু-কুঁচকে জবাব দিলেন, ‘চলচ্চিত্র নিয়ে এতদিন যে স্বপ্ন দেখেছি তা সার্থক হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ, রফতানির দ্বার উন্মোচন, শিক্ষিত ইয়াং জেনারেশনকে হলমুখী করা- এসবই সম্ভব হয়েছে আমার প্রতি দর্শক-ভক্তদের ভালোবাসার জন্য। তাই চলচ্চিত্র নিয়ে আমার কিছু পরিকল্পনা তো অবশ্যই রয়েছে। সেটা আগাম বলতে চাই না। সময়ের কাজ সময়েই করব।