রকে জুনিয়র এবং আলেসান্দ্রো গালো। প্রথমজন ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ী দলের ডিফেন্ডার, অপরজনের তেমন কোনো পরিচয় পাওয়া যায় না। তবে তাদের বর্তমান পরিচয়- তারা ব্রাজিল দলের কোচ লুই ফিলিপ স্কলারির গুপ্তচর।
পৃথিবীর প্রায় দেশের রাষ্ট্রীয়স গুপ্তচর থাকে, কিন্তু খেলায় গুপ্তচর! বিষয়টি চোখে পড়তেই বোকা বনে যাবেন যেকেউ। হয়তো খানিক সময়ের জন্য চিন্তা করার শক্তিও হারাবেন। বিশেষ করে ব্রাজিল ভক্তরা তো ভ্রুঁ কোঁচকাবেন, নিশ্চিত। হ্যা এখন খেলায়ও গুপ্তচরবৃত্তি চলে। এবং আশ্চর্যজনকভাবে এটা স্বীকৃত না হলেও জয়ের জন্য জরুরী।
এই দুই গুপ্তচরের কাজ হল- পরবর্তী ম্যাচে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষের সকল দিক খুঁটিয়ে বের করা। সেমিফাইনালে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ জার্মানি। তবে তখনো ঠিক হয়নি, কে হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার স্বাগতিক এই দেশের। কোয়ার্টার ফাইনালের ওই ম্যাচ যদি জার্মানি জেতে, তাহলে জার্মানি প্রতিপক্ষ, নতুবা ফ্রান্স।
গালো আর জুনিয়র জার্মানি-ফ্রান্স ম্যাচ দেখতে বেসক্যাম্প থেকে গোপনে অত্যাধুনিক ট্যাবলেট-সহ গিয়েছিলেন সাও পাওলো মাঠে। সেখানে জার্মানদের এক একটা স্ট্র্যাটেজিক অবস্থান পুঙ্খানুপুঙ্খ তুলে এনেছেন। এমনিতে খেলা তো স্কোলারি-সহ পুরো ব্রাজিল টিমই টিভিতে দেখছে। কিন্তু টিভির সীমাবদ্ধতা হল শুধুই বল দেখায়, পুরো মাঠ নয়। গুপ্তচরদ্বয়ের ট্যাবলেটে ধরা পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ সব মুহূর্ত। যখন আক্রান্ত হয়েছে জার্মান ডিফেন্স তখন কে কীভাবে দাঁড়াচ্ছে, কীভাবে নিজেদের গুটিয়ে আনছে, কীভাবে সাত নম্বর সোয়াইনস্টাইগার ঠিক দুই স্টপারের ওপর থেকে খেলাটা শুরু করেন- এক কথায় জার্মান ডিফেন্সের গিঁটটা ঠিক কী কী পজিশনিং থেকে তৈরি হয়েছে সবই তুলে এনেছেন এই দুই গুপ্তচর। এ বার ব্রাজিল টিমের মাথারা সেই অনুযায়ী ফরোয়ার্ডের পজিশনিংগুলো বদলাবেন।
তবে এই দুই গুপ্তচরকে পাঠানো হয়েছিল যথেষ্ট গোপনে। কিন্তু মাঠে ছবি তোলার সময় এক টিভি ক্রু তাঁদের দেখে ফেলেন। তা থেকে গুপ্তচরদের অনুপ্রবেশের খবর চাউর হয়ে যায়। সময়টা খুব সম্ভবত খারাপ যাচ্ছে ব্রাজিলের। গোপন খবরটা ফাঁস হয়ে গেল। এখনো জানা যায়নি, ফিফা কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে এই পরিপ্রেক্ষিতে।
ব্রাজিলের সময়টা খারাপ বলা হচ্ছে কারণ, পিঠে আঘাত পেয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছেন নেইমার। এদিকে মার্সেলোর দাদা মারা গেছেন। আবার ব্রাজিলের মুখপাত্র কাম মিডিয়া ম্যানেজার রডরিগো পাইভাকে বাকি বিশ্বকাপের জন্য সাসপেন্ড ও জরিমানা করেছে ফিফা। ফুটেজ দেখে ফিফা সিদ্ধান্তে এসেছে, সে দিন টানেল দিয়ে ফেরার সময় তর্কাতর্কির পর সত্যিই চিলি ফুটবলারকে মেরেছিলেন রডরিগো।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা