ক্লাসের বন্ধুরা সবাই মিলে দূরে কোথাও গেছেন। সারাবেলা ঘোরাঘুরি শেষ করে ক্লান্ত সবাই। ক্ষুধায় পেটেও চো চো করছে। খাওয়ার জন্য ঢুকলেন স্থানীয় একটি অভিজাত হোটেলে। হাতে-মুখে পানি দিয়ে বসে আছেন খাবার টেবিলে। প্লেট আর ভাত এসে হাজির। বাকি সব এখনও আসেনি। অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন কখন আসবে। পেট তোআর মানছে না। এমন সময় দেখলেন আপনার বিপরীতে যে বসেছে, সে নাকের ভেতরে তর্জনী আঙুল ঢুকিয়ে খোঁচাখুঁচি করছে। কয়েক সেকেন্ড পরেই আঙুল বের করে চোখের সামনে ধরলো। এরপর আবারও ঢুকিয়ে দিল। দেখেই চোখ ফেরালেন অন্যদিকে। একটু পর আড়চোখে তাকাতেই দেখলেন- সেই হাত দিয়েই পানির বোতল থেকে পানি ঢালল গ্লাসে। সেই বোতল ডান হাতে ধরলো আপনার পাশের জন। এবার আর বসে থাকতে পারলেন না। দৌড়ালেন বেসিনের দিকে। আপনার দৌড়ানোর কারণ কেউ না বোঝলেও একজন কিন্তু ঠিকই বোঝেছে।
এমন ঘটনা কিন্তু খুবই পরিচিত। প্রায় আমাদের এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বাসের ভেতরে, ক্লাসে বসে, বন্ধুদের আড্ডায় কিংবা বাসায় পরিবারের সদস্যদের কেউ হয়তো একই কাজটি করছেন। অযথাই নাকে খোঁচাতে দেখলে মনে হয়, তাদের কাছে এরচেয়ে বড় সুখ বুঝি পৃথিবীতে নেই! নাহলে আরেকজনের সামনে বিব্রতকর এই কাজটি কীভাবে করছেন দিনের পর দিন।
নাকে খোঁচাখুঁচির এই বাজে অভ্যাসটির আশপাশের সবাই বিরক্ত হয়, বিব্রত হয়। অভ্যাস একবার হয়ে গেলে ফেরানো খুবই কঠিন। আপনার কাছের বন্ধুর নাক খোঁচানোর খারাপ অভ্যাসটির কথা আপনি হয়তো বারবার তাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, কিন্তু সে মিনিটখানেক পরেই আবারও খোঁচাখুঁচিতে ব্যস্ত। নাক খোঁচানোর পর আবার সেই হাত জামা-কাপড়ে লাগাচ্ছেন।
আবার অনেকেই আছেন, নাকের ভেতরে থাকে লোমগুলো সবার সামনেই জোরপূর্বক একটা একটা করে টেনে-হিঁচড়ে বের করেন! আবার কেউ আসলে সেই হাত দিয়েই হ্যান্ডশেক করছেন। কী জঘন্য, একবার ভাবা যায়! ভাবলেই ঘেন্নায় গা শিরশির করে উঠে।
এই বিরক্তিকর অভ্যাসটির জন্য আপনি অপ্রিয় উঠছেন আপনার চারপাশে। ভেবে দেখুন একবার, নাক খোঁচানোর সময় আপনার পাশে থাকা লোকটির কি অবস্থা হয়। যত দ্রুত সম্ভব এই অভ্যাসটি ত্যাগ করুন। নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন আপনার হাতকে।
এজন্য গোসলের সময় ভালোভাবে নাক পরিষ্কার করুন। যেন বাইরে গেলে নাকে সুড়সুড়ি শুরু না হয়। আর হলেও তা লোকচক্ষুর আড়ালে গিয়ে করলেও ভালো। এবং কাজ শেষে হাতটি ধুয়ে ফেলুন।
তাছাড়া নাক খোঁচানোর ফলে আপনার হাতে থাকা জীবাণুগুলো নাকের ভেতরে প্রবেশ করছে। আবার নাকের ময়লাগুলো বের করে জীবাণু ছড়াচ্ছেন আপনার চারপাশে। এছাড়া নাকের লোম টেনে বের করলে বড় ধরণের ইনফেকশনও হতে পারে। কাজেই নাক খোঁচানোর অভ্যাসটি যত দ্রুত ত্যাগ করা সম্ভব ততোই ভালো।
অযথাই খোঁচাখুঁচি না করে, অন্যের বিরক্তির কারণ না হয়ে আসুন অন্যের কাছে প্রিয় হওয়ার চেষ্টা করি। আর প্রিয় হতে গেলে ‘নাক খোঁচানো’ অভ্যাসটি ত্যাগ করতেই হবে।
কার্টুন : তুলি

Author Name

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.