দেহে ক্যালসিয়ামের কাজ ও রক্তে এর মাত্রার তারতম্য হলে শারীরিক যে সমস্যা হয় তা নিয়ে আমাদের যথাযথ জ্ঞান ও সচেতনতার অভাব রয়েছে। প্রতিটি অঙ্গের কোষের কাজে ক্যালসিয়ামের ভূমিকা রয়েছে। দৈনন্দিন কাজকর্ম ও চলাফেরায় মাংসপেশির সংকোচন-প্রসারণে ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন। দেহে রক্ত সঞ্চালনে হৃদপেশির সংকোচন-প্রসারণেও ক্যালসিয়াম দরকার। কোথাও কেটে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতেও ক্যালসিয়ামের সাহায্য প্রয়োজন। আমরা সবাই জানি ক্যালসিয়ামের জন্য হাড় ও দাঁত শক্ত ও মজবুত হয়। বেশি পরিমাণে প্রায় দেড় থেকে দুই কেজি ক্যালসিয়াম মজুদ থাকে হাড় ও দাঁতে। দেহে মোট ক্যালসিয়ামের ১ ভাগ রক্তে থাকে। এ পরিমাণ ক্যালসিয়ামই দেহের জন্য এত প্রয়োজনীয় যে সামান্য মাত্রায় তারতম্য হলেও শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। সুস্থ দেহে রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে। যে হরমোনের জন্য রক্তে এ মাত্রা স্বাভাবিক থাকে তার নাম প্যারাথরমোন। ভিটামিন ডি এই কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। গলার অভ্যন্তরে থাইরয়েড গ্রন্থির পেছনে ক্ষুদ্রাকায় গোলাকৃতি প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থি থেকে প্যারাথরমোন হরমোন নিঃসৃত হয়। কোনো কারণে প্যারাথরমোন হরমোনের নিঃসরণ কম বা বেশি হলে রক্তেও ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কম বা বেশি হয়। ফলে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়।
প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থিতে টিউমার হলে প্যারাথরমোন হরমোন দেহে বেশি পরিমাণে নিঃসৃত হয়- এতে দেহে দৃশ্যত কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। এর পরিণামে ক্রমান্বয়ে হাড় ক্ষয় হতে হতে অল্প আঘাতেই হাড় ভেঙে যেতে পারে। হাড় ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারণ প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থিতে টিউমারের উপস্থিতি। এ গ্রন্থির কার্যকারিতা লোপ পেলে রোগী হাড়ে কম-বেশি ব্যথা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে উপস্থিত হতে পারেন। কিডনি অকেজো ও কিডনিতে পাথর হওয়ার পেছনে ক্যালসিয়াম ও প্যারাথরমোন হরমোনের আধিক্যের ভূমিকা আছে। কোনো উপসর্গ ছাড়াই কিডনিতে বারবার পাথর ক্যালসিয়ামের আধিক্যের জন্য হয়। ক্যালসিয়াম আধিক্যের জন্য মানসিক রোগেরও বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়।
পেপটিক আলসার, পেট ব্যথা ও উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গেও ক্যালসিয়াম আধিক্যের সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমানে প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থির আকার-অবস্থান ও প্যারাথরমোন হরমোনের পরিমাণ জানার ল্যাবরেটরি সুবিধা বাংলাদেশে রয়েছে। ক্যালসিয়ামের পরিমাণ জানার জন্যে রক্ত পরীক্ষা প্রায়ই করার প্রয়োজন হয়। কিডনি ফেলিওর ও মারাত্মক অস্থি সমস্যায় প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কেমন আছে তা নির্ণয় করা প্রয়োজন।
অধ্যাপক ডা. এমএ জলিল আনসারী
লেখক : বিভাগীয় প্রধান, ডায়াবেটিস এবং হরমোন রোগ বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থিতে টিউমার হলে প্যারাথরমোন হরমোন দেহে বেশি পরিমাণে নিঃসৃত হয়- এতে দেহে দৃশ্যত কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। এর পরিণামে ক্রমান্বয়ে হাড় ক্ষয় হতে হতে অল্প আঘাতেই হাড় ভেঙে যেতে পারে। হাড় ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারণ প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থিতে টিউমারের উপস্থিতি। এ গ্রন্থির কার্যকারিতা লোপ পেলে রোগী হাড়ে কম-বেশি ব্যথা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে উপস্থিত হতে পারেন। কিডনি অকেজো ও কিডনিতে পাথর হওয়ার পেছনে ক্যালসিয়াম ও প্যারাথরমোন হরমোনের আধিক্যের ভূমিকা আছে। কোনো উপসর্গ ছাড়াই কিডনিতে বারবার পাথর ক্যালসিয়ামের আধিক্যের জন্য হয়। ক্যালসিয়াম আধিক্যের জন্য মানসিক রোগেরও বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়।
পেপটিক আলসার, পেট ব্যথা ও উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গেও ক্যালসিয়াম আধিক্যের সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমানে প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থির আকার-অবস্থান ও প্যারাথরমোন হরমোনের পরিমাণ জানার ল্যাবরেটরি সুবিধা বাংলাদেশে রয়েছে। ক্যালসিয়ামের পরিমাণ জানার জন্যে রক্ত পরীক্ষা প্রায়ই করার প্রয়োজন হয়। কিডনি ফেলিওর ও মারাত্মক অস্থি সমস্যায় প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কেমন আছে তা নির্ণয় করা প্রয়োজন।
অধ্যাপক ডা. এমএ জলিল আনসারী
লেখক : বিভাগীয় প্রধান, ডায়াবেটিস এবং হরমোন রোগ বিভাগ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল