সাময়িকী.কম
ইফতারে ভাজাপোড়া ভালো নয়।
তাহলে কি স্বাদেও ঘাটতি হবে? একদম না। কম তেলে বা ভাপে সেদ্ধ করেও বানানো
যাবে মজাদার নানা পদ। দেখুন ফাতিমা আজিজের দেওয়া রেসিপিগুলো।
ভাপে পুরভরা মুরগি
উপকরণ: মুরগির বুকের মাংস ২ টুকরা (৩০০ গ্রাম), ঝুরি করা পনির আধা কাপ, মুরগির কিমা ২০০ গ্রাম, রসুন বাটা ৪ কোয়া, মাখন ২ টেবিল চামচ, পার্সলে বা ধনেপাতা কুচি ২ চা-চামচ, পনির (১ আঙুল সমান) ২ টুকরো, মুরগির স্টক ২ টেবিল চামচ, ক্যাপসিকাম (সরু করে কাটা) ১টি, লবণ আধা চা-চামচ, ক্রিম আধা কাপ, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, জয়ফল গুঁড়া সিকি চা-চামচ, ফয়েল পেপার পরিমাণমতো। সসের জন্য লবণ সিকি চা-চামচ, অলিভ অয়েল ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: ফ্রাইপ্যানে মাখন গলিয়ে মুরগির কিমা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নাড়ুন। লবণ, গোলমরিচ গুঁড়া ও মুরগির স্টক দিয়ে নাড়ুন। মাঝারি আঁচে কিমা সেদ্ধ হলে নামিয়ে একটি বাটিতে বেড়ে রাখুন। এবার মুরগির বুকের মাংসের মাঝখান থেকে চিরে সামান্য থেঁতলে নিন। তারপর একটি প্লেটে থেঁতলে নেওয়া টুকরাগুলো বিছিয়ে লবণ ও গোলমরিচ সামান্য বেটে দুপাশে মেখে ১৫ মিনিট রেখে দিন। এবার মাংসের টুকরার মাঝখানে কিমার পুর ভরে এক টুকরা পনির দিয়ে রোল করে দুধারে হাত দিয়ে চেপে মুখ বন্ধ করুন। এবার এই রোল দুটি ফয়েল পেপার দিয়ে মুড়ে চুলায় ৩০ মিনিট ভাপে সেদ্ধ করুন।
সসের জন্য: ফ্রাইপ্যানে অলিভ অয়েল গরম করে তাতে ক্যাপসিকাম কুচি দিয়ে নেড়ে রসুন বাটা দিয়ে একটু কষিয়ে নিন। এতে সিকি চা-চামচ লবণ, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া, ঝুরি করা পনির, ক্রিম ও জায়ফল গুঁড়া দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নামিয়ে নিন।
মুচমুচে ঝরকা
উপকরণ: ময়দা ২ কাপ, লবণ সিকি চা-চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ ও ভাজার জন্য। পানি আধা কাপ, রোস্ট করা সাদা তিল ২ টেবিল চামচ।
শিরার জন্য: চিনি ২ কাপ, পানি ১ কাপ, গোলাপজল ২ চা-চামচ, জাফরান সিকি চা-চামচ (গোলাপজলে ভিজিয়ে রাখুন)।
প্রণালি: চিনির সঙ্গে পানি মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে ঘন শিরা তৈরি করুন। ছেঁকে নিয়ে গোলাপজলে মেশানো জাফরান দিয়ে নেড়ে রাখুন। ময়দার সঙ্গে লবণ মিশিয়ে তেলের ময়ান দিন। পানি মিশিয়ে ময়দা ভালো করে মেখে নিন। ২৪টি ভাগ করুন। প্রতিটি ভাগ হাতের তালুতে নিয়ে গোল ও মসৃণ করে চ্যাপ্টা করে রাখুন। ঘণ্টা খানেক ঢেকে রেখে দিন। রুটি বেলার পিঁড়িতে বা টেবিলে লুচির মতো বেলুন। চারপাশ থেকে ১ সেন্টিমিটার ছেড়ে ছুরি দিয়ে ৫-৬টি লম্বা দাগ কাটুন। এবার সাবধানে হালকাভাবে একধার থেকে সামান্য ভাঁজ করে মাঝখানে এনে একইভাবে অপর প্রান্ত থেকে সামান্য ভাঁজ করে মাঝখানে আরেকটি অংশ আনুন। দুটি অংশ হাত দিয়ে চেপে দিন। বেলুনির হাতলের মতো দুটি হাতল হবে। দেখতে অনেকটা চকলেটের মতো লাগবে। কড়াইয়ে তেল গরম করে ঝরকার হাতল ধরে গরম ডুবো তেলে ছাড়ুন। আঁচ কমিয়ে সোনালি রং করে ভেজে তেল ছেঁকে উঠিয়ে সরাসরি িশরায় ছাড়ুন। মিনিট খানেক শিরায় ডুবিয়ে রেখে প্লেটে সাজিয়ে ওপর থেকে সাদা তিল ছিটিয়ে দিন। ডায়বেটিসের রোগীরা শিরায় না চুবিয়ে কেবল ভাজাটা খাবেন। খেয়ে স্বাদ পাবেন।
অনতন
উপকরণ: কর্নফ্লাওয়ার সিকি কাপ, ময়দা দেড় কাপ, ডিম ২টি, লবণ সিকি চা-চামচ।
পুরের জন্য: মুরগির মাংসের কিমা আধা কাপ, চিংড়ি মাছের কিমা ১০০ গ্রাম, গাজর (ঝুরি করা) সিকি কাপ, বাঁধাকপি (ঝুরি করে কাটা) পৌনে এক কাপ, পেঁয়াজ কুচি ৪ টেবিল চামচ, আদা কুচি ১ চা-চামচ, রসুন কুচি ১ চা-চামচ, লবণ আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি ৫টি, সয়াসস ১ চা-চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ২ চা-চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ, ভাজার জন্য (যদি কেউ ভাপে সেদ্ধ করে খেতে না চান)।
প্রণালি: দুটি ডিম ফেটে নিন। এখান থেকে ২ চা-চামচ ডিম মুরগি ও চিংড়ির কিমার সঙ্গে ভালো করে মেখে নিন। বাকি ডিম ময়দার জন্য রেখে দিন। কিমার সঙ্গে আধা চা-চামচ লবণ, গোলমরিচ গুঁড়া, কর্নফ্লাওয়ার ও সয়াসস মিশিয়ে মেখে রেখে দিন কিছুক্ষণ। ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ ও রসুন হালকা বাদামি করে ভেজে আদা কুচি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ভাজুন। এবার কিমার মিশ্রণ দিয়ে ভালো করে নেড়ে খানিকটা কষিয়ে নিন। কিমার পানি টেনে এলে বাঁধাকপি ঝুরি দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়ুন। কপি মজে এলে গাজর ঝুরি ও কাঁচা মরিচের কুচি দিয়ে ভালো করে নাড়ুন। বেশ খানিকটা ভাজা ভাজা হলে নামিয়ে রাখুন। বাটিতে ১ কাপ ময়দা, কর্নফ্লাওয়ার ও লবণ মিশিয়ে নিন। এবার বাকি ডিম দিয়ে ময়দার সঙ্গে পরিমাণমতো সামান্য পানি দিয়ে ভালোভাবে মেখে নিন। ময়ান যেন শক্ত হয়।
রুটি বেলার পিঁড়িতে বা টেবিলে ময়দা ছিটিয়ে চারকোনা রুটি বেলুন। ছুরি দিয়ে লম্বায় ৭ সেন্টিমিটার দূরে দূরে দাগ কাটুন। এভাবে আড়াআড়ি ও ৭ সেন্টিমিটার দূরে দূরে দাগ কেটে চারকোনা টুকরা করুন। প্রতি টুকরার এক কোনায় কিমার মিশ্রণ (আন্দাজমতো) দিয়ে কিমাসহ কোনা দুবার মুড়িয়ে নিন। তরপর দুহাতে তুলে নিয়ে (ভাঁজ যেন নিচের দিকে থাকে) হাতের দুকোনা একটির ওপর অন্যটির কিছু অংশ রেখে চেপে দিন। অনেকটা প্রজাপতির মতো দেখাবে। তেলে সোনালি করে ভেজে তেল ছেঁকে উঠিয়ে ডিশে সাজিয়ে সসের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন। যাঁরা তেলে ভাজা খেতে পছন্দ করেন না, তাঁরা ইচ্ছা করলে ভাপিয়ে নিয়েও খেতে পারেন।
সুজি-পনির ইডলি
উপকরণ: সুজি (চেলে নেওয়া) ১ কাপ, টক দই ১ কাপ, বেকিং সোডা সিকি চা-চামচ, পেঁয়াজ (মাঝারি) ১টি, রসুন থেঁতো করা ২ কোয়া, লবণ স্বাদমতো, কাঁচা মরিচ (মিহি কুচি) ৪টি, ক্যাপসিকাম অর্ধেকটি (ছোট কিউব করে কাটা), পনির (ঝুরি করা) সিকি কাপ ও প্রতিটি ইডলির জন্য আরও ১ চা-চামচ করে। টমেটো (বীচি ফেলে ছোট কিউব করে কাটা) সিকি কাপ, গাজর (পাতলা করে লম্বা কুচি) সিকি কাপ।
প্রণালি: পেঁয়াজ ও রসুন গ্রেটারে মিহি করে গ্রেট করে নিন অথবা একত্রে পাটায় পিষে নিন।
গাজর, টমেটো, ক্যাপসিকাম ও টপিংয়ের পনির বাদে অন্যান্য সমস্ত উপকরণ একত্রে ভালো করে মিশিয়ে মসৃণ করে ফেটে আধা ঘণ্টা রেখে দিন। ঘন ব্যাটার হতে হবে।
আধ ঘণ্টা পর আরেকবার মসৃণ করে ফেটে নিন। মাইক্রোওয়েভ ওভেনের কুকারে আধা কাপ পানি ১ মিনিট গরম করে তাতে স্টিমার বসিয়ে দিন। এর ওপর ইডলির ছাঁচ বসান। ইডলির ছাঁচে বা ছোট ছোট বাটিতে ব্যাটার ঢেলে তার ওপর প্রতিটিতে ১ চা-চামচ করে পনির ঝুরি ছিটিয়ে দিন। এর ওপরে ক্যাপসিকাম ও গাজর কুচি দিয়ে পছন্দমতো সাজিয়ে স্টিমারে রেখে মাইক্রোওয়েভ কুকার ঢেকে হাইপাওয়ারে প্রথমে ৩ মিনিট ও পরে ২ মিনিট ভাপ দিন। হয়ে গেল চটজলদি সুজি পনির ইডলি। চুলায়ও স্টিমারে ইডলির ছাঁচে স্টিম করতে পারেন। নারকেলের চাটনি অথবা পুদিনাপাতা ও ধনেপাতার চাটনির সঙ্গে পরিবেশন করতে পারেন।
নারকেলের চাটনি
উপকরণ: কোরানো নারকেল ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি ১ গোছা, কাঁচা মরিচ কুচি ৫টি, রসুন ৪ কোয়া, ভাজা জিরা আধা চা-চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, ভাজা চিনাবাদাম ১ টেবিল চামচ, শুকনা মরিচ গুঁড়া সিকি চা-চামচ, লবণ আধা চা-চামচ, চিনি আধা চা-চামচ (ঐচ্ছিক)।
প্রণালি: লেবুর রস ও মরিচ গুঁড়া বাদে অন্যান্য সমস্ত উপকরণ পাটায় মসৃণ করে বেটে নিয়ে লেবুর রস ও মরিচ গুঁড়া মিশিয়ে গরম গরম ইডলির সঙ্গে পরিবেশন করুন।
মুরগির কাটলেট
উপকরণ: মুরগির মাংসের কিমা ৪০০ গ্রাম, আদা বাটা ২ চা-চামচ, রসুন বাটা ২ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ (মিহি কুচি) ৪টি, পেঁয়াজ মিহি কুচি ৪ টেবিল চামচ, তাবাস্কো সস ১ টেবিল চামচ, সয়াসস ১ টেবিল চামচ, লবণ সিকি চা-চামচ বা স্বাদ অনুযায়ী, পুদিনাপাতা কুচি ৪ টেবিল চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ২ চা-চামচ, ডিমের সাদা অংশ ৪টি, ময়দা আধা কাপ, শুকনা মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, কালো গোলমরিচ গুঁড়া দেড় চা-চামচ, ব্রেড ক্রাম্ব ৪ কাপ, চিনি আধা চা-চামচ, লেবুর রস ২ চা-চামচ, তেল ভাজার জন্য।
প্রণালি: তেল, ডিম, ব্রেড ক্রাম্ব, ময়দা ও মরিচ গুঁড়া বাদে কিমার সঙ্গে অন্যান্য সমস্ত উপকরণ একত্রে মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন। একটি প্লেটে ময়দার সঙ্গে মরিচ গুঁড়া মিশিয়ে ছড়িয়ে রাখুন। ডিমের সাদা অংশ বাকি গোলমরিচ এবং সামান্য লবণ দিয়ে ফেটে নিন। (ভাজার ঠিক আগে ডিম ফেটবেন)।
এবার একটু করে কিমার মিশ্রণ হাতের তালুতে নিয়ে কাটলেটের আকৃতি দিয়ে তৈরি করে মরিচ গুঁড়া মেশানো ময়দায় গড়িয়ে একটি ট্রেতে রাখুন। এভাবে সবগুলো কাটলেট তৈরি করে ট্রেতে সাজিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন কিছুক্ষণ। অন্য একটি প্লেটে ব্রেড ক্রাম্ব ছড়িয়ে রাখুন। প্রতিটি কাটলেট প্রথমে ডিমে চুবিয়ে ব্রেড ক্রাম্বে গড়িয়ে আবার ডিমে চুবিয়ে ব্রেড ক্রাম্বে সাজিয়ে আরও কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিন। তবে ট্রের ওপর একটি কাগজ বিছিয়ে নিয়ে তারপর কাটলেটগুলো রেখে ফ্রিজে রাখবেন।
কড়াই বা ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করে অল্প আঁচে সোনালি করে কাটলেট ভেজে তেল ছেঁকে উঠিয়ে নিন। চাটনি বা সসের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
মোমো
উপকরণ: ময়দা ২ কাপ, তেল ২ টেবিল চামচ, মুরগির কিমা দেড় কাপ, থেঁতো করা রসুন ১ টেবিল চামচ, আদা (মিহি কুচি) ৩ চা-চামচ, পেঁয়াজপাতা কুচি ২টি, (মাঝারি), লবণ স্বাদমতো, সয়াসস ২ চা-চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, লেমন রাইন্ড বা লেবুর খোসা কুচি আধা টেবিল চামচ, মাখন ১ টেবিল চামচ।
সসের জন্য
উপকরণ: টমেটো ২টি, শুকনা মরিচ (২ টেবিল চামচ সিরকায় ৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা) ৬টি, রসুন ৮ কোয়া, আদা ১ টুকরা, ভাজা জিরা আধা চা-চামচ, লবণ সিকি চা-চামচ, চিনি (ঐচ্ছিক) আধা চা-চামচ।
প্রণালি: ময়দার সঙ্গে আধা চা-চামচ লবণ ও তেল মিশিয়ে ময়ান দিন। পরিমাণমতো পানি মিশিয়ে ময়ান দিন এবং নরম খামির তৈরি করুন। ঠিকমতো ময়ান হলে হাতে কোনো ময়ান বা খামির লেগে থাকবে না।
কিমার সঙ্গে পেঁয়াজ, আদা ও রসুন কুচি, সয়াসস, লবণ ও গোলমরিচ গুঁড়া মিশিয়ে মেখে নিন। ফ্রাইপ্যানে মাখন গলিয়ে কিমার মিশ্রণ অল্প আঁচে রান্না করুন। পানি টেনে এলে পেঁয়াজপাতার কুচি দিয়ে নেড়ে আরও ২-১ মিনিট ঢেকে রাখুন। এবার ঢাকনা খুলে কাঁচা মরিচ কুচি ও লেবুর খোসার কুচি দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিয়ে চুলা বন্ধ করে দুই মিনিট রাখুন।
ময়দার খামির থেকে ছোট ছোট করে গোলা ভাগ করুন। প্রতিটি গোলা হাতের তালুতে নিয়ে মসৃণ করে বলের আকৃতি গড়ে চ্যাপ্টা করে রুটি বেলুন। রুটির মধ্যখানটা ভারী হলেও ধার বা কিনার পাতলা থাকবে। রুটির মাঝখানে ১ টেবিল চামচ করে পুর দিয়ে অর্ধেকটা মুড়ে দিয়ে (চন্দ্রাকৃতি) ও পেঁচিয়ে এনে বাকি অর্ধেক চেপে দিন, যেন মুখ খোলা না থাকে।
মাইক্রোওয়েভ কুকারে আধা কাপ পানি নিয়ে ১ মিনিট গরম করে তার ওপর স্টিমার বসিয়ে কয়েকটি মোমো দিয়ে ঢেকে দিন। হাইপাওয়ারে প্রথমে ৩ মিনিট ও পরে ২ মিনিট স্টিম করে ১ মিনিট স্ট্যান্ডিং টাইমে রেখে নামিয়ে সাজিয়ে সস দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
ভাপে পুরভরা মুরগি
উপকরণ: মুরগির বুকের মাংস ২ টুকরা (৩০০ গ্রাম), ঝুরি করা পনির আধা কাপ, মুরগির কিমা ২০০ গ্রাম, রসুন বাটা ৪ কোয়া, মাখন ২ টেবিল চামচ, পার্সলে বা ধনেপাতা কুচি ২ চা-চামচ, পনির (১ আঙুল সমান) ২ টুকরো, মুরগির স্টক ২ টেবিল চামচ, ক্যাপসিকাম (সরু করে কাটা) ১টি, লবণ আধা চা-চামচ, ক্রিম আধা কাপ, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, জয়ফল গুঁড়া সিকি চা-চামচ, ফয়েল পেপার পরিমাণমতো। সসের জন্য লবণ সিকি চা-চামচ, অলিভ অয়েল ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: ফ্রাইপ্যানে মাখন গলিয়ে মুরগির কিমা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নাড়ুন। লবণ, গোলমরিচ গুঁড়া ও মুরগির স্টক দিয়ে নাড়ুন। মাঝারি আঁচে কিমা সেদ্ধ হলে নামিয়ে একটি বাটিতে বেড়ে রাখুন। এবার মুরগির বুকের মাংসের মাঝখান থেকে চিরে সামান্য থেঁতলে নিন। তারপর একটি প্লেটে থেঁতলে নেওয়া টুকরাগুলো বিছিয়ে লবণ ও গোলমরিচ সামান্য বেটে দুপাশে মেখে ১৫ মিনিট রেখে দিন। এবার মাংসের টুকরার মাঝখানে কিমার পুর ভরে এক টুকরা পনির দিয়ে রোল করে দুধারে হাত দিয়ে চেপে মুখ বন্ধ করুন। এবার এই রোল দুটি ফয়েল পেপার দিয়ে মুড়ে চুলায় ৩০ মিনিট ভাপে সেদ্ধ করুন।
সসের জন্য: ফ্রাইপ্যানে অলিভ অয়েল গরম করে তাতে ক্যাপসিকাম কুচি দিয়ে নেড়ে রসুন বাটা দিয়ে একটু কষিয়ে নিন। এতে সিকি চা-চামচ লবণ, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া, ঝুরি করা পনির, ক্রিম ও জায়ফল গুঁড়া দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নামিয়ে নিন।
উপকরণ: ময়দা ২ কাপ, লবণ সিকি চা-চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ ও ভাজার জন্য। পানি আধা কাপ, রোস্ট করা সাদা তিল ২ টেবিল চামচ।
শিরার জন্য: চিনি ২ কাপ, পানি ১ কাপ, গোলাপজল ২ চা-চামচ, জাফরান সিকি চা-চামচ (গোলাপজলে ভিজিয়ে রাখুন)।
প্রণালি: চিনির সঙ্গে পানি মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে ঘন শিরা তৈরি করুন। ছেঁকে নিয়ে গোলাপজলে মেশানো জাফরান দিয়ে নেড়ে রাখুন। ময়দার সঙ্গে লবণ মিশিয়ে তেলের ময়ান দিন। পানি মিশিয়ে ময়দা ভালো করে মেখে নিন। ২৪টি ভাগ করুন। প্রতিটি ভাগ হাতের তালুতে নিয়ে গোল ও মসৃণ করে চ্যাপ্টা করে রাখুন। ঘণ্টা খানেক ঢেকে রেখে দিন। রুটি বেলার পিঁড়িতে বা টেবিলে লুচির মতো বেলুন। চারপাশ থেকে ১ সেন্টিমিটার ছেড়ে ছুরি দিয়ে ৫-৬টি লম্বা দাগ কাটুন। এবার সাবধানে হালকাভাবে একধার থেকে সামান্য ভাঁজ করে মাঝখানে এনে একইভাবে অপর প্রান্ত থেকে সামান্য ভাঁজ করে মাঝখানে আরেকটি অংশ আনুন। দুটি অংশ হাত দিয়ে চেপে দিন। বেলুনির হাতলের মতো দুটি হাতল হবে। দেখতে অনেকটা চকলেটের মতো লাগবে। কড়াইয়ে তেল গরম করে ঝরকার হাতল ধরে গরম ডুবো তেলে ছাড়ুন। আঁচ কমিয়ে সোনালি রং করে ভেজে তেল ছেঁকে উঠিয়ে সরাসরি িশরায় ছাড়ুন। মিনিট খানেক শিরায় ডুবিয়ে রেখে প্লেটে সাজিয়ে ওপর থেকে সাদা তিল ছিটিয়ে দিন। ডায়বেটিসের রোগীরা শিরায় না চুবিয়ে কেবল ভাজাটা খাবেন। খেয়ে স্বাদ পাবেন।
অনতন
উপকরণ: কর্নফ্লাওয়ার সিকি কাপ, ময়দা দেড় কাপ, ডিম ২টি, লবণ সিকি চা-চামচ।
পুরের জন্য: মুরগির মাংসের কিমা আধা কাপ, চিংড়ি মাছের কিমা ১০০ গ্রাম, গাজর (ঝুরি করা) সিকি কাপ, বাঁধাকপি (ঝুরি করে কাটা) পৌনে এক কাপ, পেঁয়াজ কুচি ৪ টেবিল চামচ, আদা কুচি ১ চা-চামচ, রসুন কুচি ১ চা-চামচ, লবণ আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি ৫টি, সয়াসস ১ চা-চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ২ চা-চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ, ভাজার জন্য (যদি কেউ ভাপে সেদ্ধ করে খেতে না চান)।
প্রণালি: দুটি ডিম ফেটে নিন। এখান থেকে ২ চা-চামচ ডিম মুরগি ও চিংড়ির কিমার সঙ্গে ভালো করে মেখে নিন। বাকি ডিম ময়দার জন্য রেখে দিন। কিমার সঙ্গে আধা চা-চামচ লবণ, গোলমরিচ গুঁড়া, কর্নফ্লাওয়ার ও সয়াসস মিশিয়ে মেখে রেখে দিন কিছুক্ষণ। ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ ও রসুন হালকা বাদামি করে ভেজে আদা কুচি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ভাজুন। এবার কিমার মিশ্রণ দিয়ে ভালো করে নেড়ে খানিকটা কষিয়ে নিন। কিমার পানি টেনে এলে বাঁধাকপি ঝুরি দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়ুন। কপি মজে এলে গাজর ঝুরি ও কাঁচা মরিচের কুচি দিয়ে ভালো করে নাড়ুন। বেশ খানিকটা ভাজা ভাজা হলে নামিয়ে রাখুন। বাটিতে ১ কাপ ময়দা, কর্নফ্লাওয়ার ও লবণ মিশিয়ে নিন। এবার বাকি ডিম দিয়ে ময়দার সঙ্গে পরিমাণমতো সামান্য পানি দিয়ে ভালোভাবে মেখে নিন। ময়ান যেন শক্ত হয়।
রুটি বেলার পিঁড়িতে বা টেবিলে ময়দা ছিটিয়ে চারকোনা রুটি বেলুন। ছুরি দিয়ে লম্বায় ৭ সেন্টিমিটার দূরে দূরে দাগ কাটুন। এভাবে আড়াআড়ি ও ৭ সেন্টিমিটার দূরে দূরে দাগ কেটে চারকোনা টুকরা করুন। প্রতি টুকরার এক কোনায় কিমার মিশ্রণ (আন্দাজমতো) দিয়ে কিমাসহ কোনা দুবার মুড়িয়ে নিন। তরপর দুহাতে তুলে নিয়ে (ভাঁজ যেন নিচের দিকে থাকে) হাতের দুকোনা একটির ওপর অন্যটির কিছু অংশ রেখে চেপে দিন। অনেকটা প্রজাপতির মতো দেখাবে। তেলে সোনালি করে ভেজে তেল ছেঁকে উঠিয়ে ডিশে সাজিয়ে সসের সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন। যাঁরা তেলে ভাজা খেতে পছন্দ করেন না, তাঁরা ইচ্ছা করলে ভাপিয়ে নিয়েও খেতে পারেন।
সুজি-পনির ইডলি
উপকরণ: সুজি (চেলে নেওয়া) ১ কাপ, টক দই ১ কাপ, বেকিং সোডা সিকি চা-চামচ, পেঁয়াজ (মাঝারি) ১টি, রসুন থেঁতো করা ২ কোয়া, লবণ স্বাদমতো, কাঁচা মরিচ (মিহি কুচি) ৪টি, ক্যাপসিকাম অর্ধেকটি (ছোট কিউব করে কাটা), পনির (ঝুরি করা) সিকি কাপ ও প্রতিটি ইডলির জন্য আরও ১ চা-চামচ করে। টমেটো (বীচি ফেলে ছোট কিউব করে কাটা) সিকি কাপ, গাজর (পাতলা করে লম্বা কুচি) সিকি কাপ।
প্রণালি: পেঁয়াজ ও রসুন গ্রেটারে মিহি করে গ্রেট করে নিন অথবা একত্রে পাটায় পিষে নিন।
গাজর, টমেটো, ক্যাপসিকাম ও টপিংয়ের পনির বাদে অন্যান্য সমস্ত উপকরণ একত্রে ভালো করে মিশিয়ে মসৃণ করে ফেটে আধা ঘণ্টা রেখে দিন। ঘন ব্যাটার হতে হবে।
আধ ঘণ্টা পর আরেকবার মসৃণ করে ফেটে নিন। মাইক্রোওয়েভ ওভেনের কুকারে আধা কাপ পানি ১ মিনিট গরম করে তাতে স্টিমার বসিয়ে দিন। এর ওপর ইডলির ছাঁচ বসান। ইডলির ছাঁচে বা ছোট ছোট বাটিতে ব্যাটার ঢেলে তার ওপর প্রতিটিতে ১ চা-চামচ করে পনির ঝুরি ছিটিয়ে দিন। এর ওপরে ক্যাপসিকাম ও গাজর কুচি দিয়ে পছন্দমতো সাজিয়ে স্টিমারে রেখে মাইক্রোওয়েভ কুকার ঢেকে হাইপাওয়ারে প্রথমে ৩ মিনিট ও পরে ২ মিনিট ভাপ দিন। হয়ে গেল চটজলদি সুজি পনির ইডলি। চুলায়ও স্টিমারে ইডলির ছাঁচে স্টিম করতে পারেন। নারকেলের চাটনি অথবা পুদিনাপাতা ও ধনেপাতার চাটনির সঙ্গে পরিবেশন করতে পারেন।
নারকেলের চাটনি
উপকরণ: কোরানো নারকেল ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি ১ গোছা, কাঁচা মরিচ কুচি ৫টি, রসুন ৪ কোয়া, ভাজা জিরা আধা চা-চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, ভাজা চিনাবাদাম ১ টেবিল চামচ, শুকনা মরিচ গুঁড়া সিকি চা-চামচ, লবণ আধা চা-চামচ, চিনি আধা চা-চামচ (ঐচ্ছিক)।
প্রণালি: লেবুর রস ও মরিচ গুঁড়া বাদে অন্যান্য সমস্ত উপকরণ পাটায় মসৃণ করে বেটে নিয়ে লেবুর রস ও মরিচ গুঁড়া মিশিয়ে গরম গরম ইডলির সঙ্গে পরিবেশন করুন।
মুরগির কাটলেট
উপকরণ: মুরগির মাংসের কিমা ৪০০ গ্রাম, আদা বাটা ২ চা-চামচ, রসুন বাটা ২ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ (মিহি কুচি) ৪টি, পেঁয়াজ মিহি কুচি ৪ টেবিল চামচ, তাবাস্কো সস ১ টেবিল চামচ, সয়াসস ১ টেবিল চামচ, লবণ সিকি চা-চামচ বা স্বাদ অনুযায়ী, পুদিনাপাতা কুচি ৪ টেবিল চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ২ চা-চামচ, ডিমের সাদা অংশ ৪টি, ময়দা আধা কাপ, শুকনা মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, কালো গোলমরিচ গুঁড়া দেড় চা-চামচ, ব্রেড ক্রাম্ব ৪ কাপ, চিনি আধা চা-চামচ, লেবুর রস ২ চা-চামচ, তেল ভাজার জন্য।
প্রণালি: তেল, ডিম, ব্রেড ক্রাম্ব, ময়দা ও মরিচ গুঁড়া বাদে কিমার সঙ্গে অন্যান্য সমস্ত উপকরণ একত্রে মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন। একটি প্লেটে ময়দার সঙ্গে মরিচ গুঁড়া মিশিয়ে ছড়িয়ে রাখুন। ডিমের সাদা অংশ বাকি গোলমরিচ এবং সামান্য লবণ দিয়ে ফেটে নিন। (ভাজার ঠিক আগে ডিম ফেটবেন)।
এবার একটু করে কিমার মিশ্রণ হাতের তালুতে নিয়ে কাটলেটের আকৃতি দিয়ে তৈরি করে মরিচ গুঁড়া মেশানো ময়দায় গড়িয়ে একটি ট্রেতে রাখুন। এভাবে সবগুলো কাটলেট তৈরি করে ট্রেতে সাজিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন কিছুক্ষণ। অন্য একটি প্লেটে ব্রেড ক্রাম্ব ছড়িয়ে রাখুন। প্রতিটি কাটলেট প্রথমে ডিমে চুবিয়ে ব্রেড ক্রাম্বে গড়িয়ে আবার ডিমে চুবিয়ে ব্রেড ক্রাম্বে সাজিয়ে আরও কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিন। তবে ট্রের ওপর একটি কাগজ বিছিয়ে নিয়ে তারপর কাটলেটগুলো রেখে ফ্রিজে রাখবেন।
কড়াই বা ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করে অল্প আঁচে সোনালি করে কাটলেট ভেজে তেল ছেঁকে উঠিয়ে নিন। চাটনি বা সসের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
মোমো
উপকরণ: ময়দা ২ কাপ, তেল ২ টেবিল চামচ, মুরগির কিমা দেড় কাপ, থেঁতো করা রসুন ১ টেবিল চামচ, আদা (মিহি কুচি) ৩ চা-চামচ, পেঁয়াজপাতা কুচি ২টি, (মাঝারি), লবণ স্বাদমতো, সয়াসস ২ চা-চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, লেমন রাইন্ড বা লেবুর খোসা কুচি আধা টেবিল চামচ, মাখন ১ টেবিল চামচ।
সসের জন্য
উপকরণ: টমেটো ২টি, শুকনা মরিচ (২ টেবিল চামচ সিরকায় ৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা) ৬টি, রসুন ৮ কোয়া, আদা ১ টুকরা, ভাজা জিরা আধা চা-চামচ, লবণ সিকি চা-চামচ, চিনি (ঐচ্ছিক) আধা চা-চামচ।
প্রণালি: ময়দার সঙ্গে আধা চা-চামচ লবণ ও তেল মিশিয়ে ময়ান দিন। পরিমাণমতো পানি মিশিয়ে ময়ান দিন এবং নরম খামির তৈরি করুন। ঠিকমতো ময়ান হলে হাতে কোনো ময়ান বা খামির লেগে থাকবে না।
কিমার সঙ্গে পেঁয়াজ, আদা ও রসুন কুচি, সয়াসস, লবণ ও গোলমরিচ গুঁড়া মিশিয়ে মেখে নিন। ফ্রাইপ্যানে মাখন গলিয়ে কিমার মিশ্রণ অল্প আঁচে রান্না করুন। পানি টেনে এলে পেঁয়াজপাতার কুচি দিয়ে নেড়ে আরও ২-১ মিনিট ঢেকে রাখুন। এবার ঢাকনা খুলে কাঁচা মরিচ কুচি ও লেবুর খোসার কুচি দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিয়ে চুলা বন্ধ করে দুই মিনিট রাখুন।
ময়দার খামির থেকে ছোট ছোট করে গোলা ভাগ করুন। প্রতিটি গোলা হাতের তালুতে নিয়ে মসৃণ করে বলের আকৃতি গড়ে চ্যাপ্টা করে রুটি বেলুন। রুটির মধ্যখানটা ভারী হলেও ধার বা কিনার পাতলা থাকবে। রুটির মাঝখানে ১ টেবিল চামচ করে পুর দিয়ে অর্ধেকটা মুড়ে দিয়ে (চন্দ্রাকৃতি) ও পেঁচিয়ে এনে বাকি অর্ধেক চেপে দিন, যেন মুখ খোলা না থাকে।
মাইক্রোওয়েভ কুকারে আধা কাপ পানি নিয়ে ১ মিনিট গরম করে তার ওপর স্টিমার বসিয়ে কয়েকটি মোমো দিয়ে ঢেকে দিন। হাইপাওয়ারে প্রথমে ৩ মিনিট ও পরে ২ মিনিট স্টিম করে ১ মিনিট স্ট্যান্ডিং টাইমে রেখে নামিয়ে সাজিয়ে সস দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।