সাময়িকী.কম
অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিশ্বের বুকে এমনই একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ রয়েছে যে দেশের জনসংখ্যা মাত্র তিনজন। শুধু তাই নয় দেশটির নিজস্ব পতাকা, পাসপোর্ট, মুদ্রা সবই রয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম দেশটির নাম প্রিন্সিপালিটি অব সিল্যান্ড।  সংক্ষেপে এটিকে সিল্যান্ড বলা হয়। ক্ষুদ্রতম এই দেশটির মোট আয়তন ৫৫০ স্কয়ার মিটার। ইংল্যান্ডের উত্তর সাগরে এই রাষ্ট্রটির অবস্থান। দেশটির একটি রাজধানীও রয়েছে। দেশটির রাজধানীর নাম HM Fort Roughs। দেশটিতে ইংরেজি ভাষা প্রচলিত এবং মুদ্রার নাম সিল্যানন্ড ডলার। তবে বাইরের কোনো দেশে এই মুদ্রা চলে না।  
এটি আসলে ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি সমুদ্র বন্দর। জার্মান সেনারা যে কোনো সময় ইংল্যান্ড আক্রমণ করতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ইংল্যান্ডের উপকূলভাগে সমুদ্র দুর্গ বানানোর পরিকল্পনা করল। সে পরিকল্পনা থেকেই উপকূল থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে বানানো হলো মউনশেল সি ফোর্ট। এখান থেকে শত্রু যুদ্ধ জাহাজগুলোর ওপর নজরদারি করা হতো। প্রয়োজনে শত্রু জাহাজে আক্রমণ পরিচালনার কাজও চলত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে অন্যান্য অসংখ্য দুর্গের সঙ্গে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এটাকেও পরিত্যক্ত ঘোষণা করে।

১৯৬৭ সালের ২রা সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ নাগরিক Major Paddz Roy Bates এবং তার পরিবার এই জায়গাটির স্বত্বাধিকারী হোন। তারপর তারা এটাকে একটি স্বাধীন মাইক্রো রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেন। পৃথিবীর কোনো দেশ এখনও সিল্যান্ডকে স্বীকৃতি না দিলেও কেউ তাদের বিরোধিতা করেনি। মোট জনসংখ্যার তিনজনই Bates পরিবারের সদস্য এবং যথাক্রমে তারা এই রাজ্যের রাজা, রানী এবং রাজপুত্র।
অদ্ভুত এই দেশটি সাগরের উপর ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। তাও সরাসরি সাগরের বুকে নয়। মাটি থেকে অনেকটা উপরে দুটো বড় বড় স্টিলের পাইপের উপর এই দেশটির অবস্থান। এই দেশটিতে কোনো মাটি নেই। পুরোটাই স্টিল। এই দেশটিতে যেতে হলে ইংল্যান্ডের উত্তর উপকূল থেকে ১০ কিলোমিটার সাগরের গভীরে যেতে হবে। দেশটিতে একটিমাত্র ঘর চোখে পড়বে এবং সেটিই এই দেশের রাজপ্রাসাদ। রাজপ্রাসাদের উপর দেশটির পতাকা পতপত করে উড়তে দেখা যাবে।
এই সিল্যান্ডে একবার অগ্নিকান্ড সংঘটিত হয়। সময়টি ছিল ২০০৬ সালের ২৩ জুন। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লাগে। এতে সিল্যান্ডের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ইংল্যান্ডের উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার এসে তাদেরকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে সিল্যান্ডকে মেরামত করা হলে ২০০৬ সালের নভেম্বরে তারা আবার সিল্যান্ডে ফিরে যান।


বিভাগ:

Author Name

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.