স্তব্ধ কুয়াশার অন্তরালের জমাট মেঘ হঠাৎ জোৎস্না হয়ে গেলে, শুরু হয় ফোটন ঘটিত আঠালো বৃষ্টি,শুরু হয় চাওয়ার প্লাবন।
এ প্লাবন আলোর মতো, শেষ নেই
সব ভেসে যায় বারবার প্লাবনের জলে,
জীবন কেন্দ্রে তৃষ্ণার শেষ দেখা ছাড়া
কারও আর তখন কিছু করার থাকে না।
অতিপ্রাকৃতিক হয়ে গেছি।
বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করি, বৃষ্টিও নামে,
ভিজে যায় পথঘাট, নষ্ট শহর,
রক্তের দাগ মুছে যায়,
কিন্তু তুমি আর আমি ভিজতে পারি না।
সত্য বলে, আমরা এখন এমন একক
চোখের জল ছাড়া আর কোন প্লাবনে ডুবি না।
এ জার্নি উইথ টাইম
জিজ্ঞেস করলাম—‘যাচ্ছি কোথায়?’
উত্তর পেলাম—‘স্টেশনে।‘
‘কোন স্টেশন?’—প্রশ্ন এবার,
উত্তর এলো—‘তাতো জানিনা।‘
এঞ্জিন থেকে শব্দ পেলাম—
‘এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাচ্ছি,
কোথায় যাচ্ছি জেনে লাভ কি!
৪৩ বছর ট্রেনে চড়নি?’
প্রেরণা
স্বপ্ন হয়, প্রশ্ন হয়, চিন্তা হয় আর
চেতনার মাঝে জাগে অচেনা পাহাড়,
যা আছে প্রাণের কাছে, তাই হয় দূর
অচেনা চেনার মাঝে সমুদ্র প্রচুর।
কেন যে এমন হয় জানিনা এখন,
একি তবে এনট্রপি, ভাঙাগড়া মন
নিয়ম সত্য ভুলে নড়বড়ে ভিত,
পরমা তৃষ্ণা তুলে অযথা গনিত?
এটা কি নিয়ম নাকি? তাই যদি হয়
তবে সত্য, ধ্রুব সত্য, যা আছে প্রনয়,
তাই হল সুপ্ত সুখ চেনা অচেনার
দূর ও কাছের টানে প্রেরণা বাঁচার।
রেললাইন
জীবনকে নিয়ে রেললাইনের মত পাশাপাশি থাকতে চেয়েছিলাম
ইচ্ছে ছিল সৃষ্টির উন্মাদনায় জড় করবো সমস্ত বিস্ময়
ইচ্ছেমত গোলাপ, চামেলি, বেলির রঙ বদলে দিয়ে
বারবার ঘুরেফিরে দেখে আসব ইতিহাস,
সমস্ত কবরখানা আর শ্মশানে গড়ে তুলবো বকুল বাগান
হৃৎপিণ্ডের কনসার্টে হবে প্রতিদিন বেদনামধুর অন্তরসঙ্গীত,
খনন করবো চোখের জলের দিঘি, জলপরীদের আনন্দনিবাস,
সুখের আইলায় প্রতিদিন ভেঙে দেবো প্রতিক্ষণের শ্যাওলার সমাজ।
কিন্তু তা আর হল না, জীবন রেললাইন হয়ে চলতে চলতে
কোন এক প্রান্তবিন্দুতে গিয়ে তৈরি করলো এক অযান্ত্রিক ত্রিভুজ,
একটা লাল বাতি দেখতে পেলাম দূরে বহুদুরে
সস্যুরের দ্যোতক/দ্যোতনা বুঝে দেখলাম ওখানে লেখা—‘থামো!’ছবিঃ কবির ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে নেয়া।