নুজাত লামিশা
সাময়িকী.কম

ঢাকা : মন খারাপ থাকলে মানুষ কতো কিছুই না করে। গান শোনে,গল্পের বই পড়ে,মুভি দেখে কিংবা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়। কেউ কেউ হয়তো মাঠে খেলে। সেটা হয়তো ক্রিকেট কিংবা ফুটবল অথবা অন্য কিছু। কিন্তু ছেলেটির এসব কিছুই করতে ভালো লাগত না। মন খারাপ থাকলে তার সাইকেল চালাতে ভালো লাগত। ভালো লাগত সাইকেলের প্যাডেল চেপে অনেকখানি পথ পাড়ি দিতে। সাইকেলের চাকার সাথে চলমান জীবনের একটা সাদৃশ্য বোধহয় খুঁজে পেয়েছিলো ছেলেটি। একা একা কথা বলতো নিজের সাথে, সবুজের সাথে, প্রকৃতির সাথে। বোধহয় হিসেব করতো জীবনের সব পাওয়া না পাওয়ার। আবার হয়তো হিসেব করতো জীবনের পথে পাড়ি দিতে হবে বহুদুর, অনেকদুর। হে,বহুদুর যাবার স্বপ্নবাজ সেই ছেলেটির নাম আবু সালমান মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ। আর বর্তমানে সমধিক পরিচিতি আরজে সালমান নামেই। শুধু আরজে সালমান বললে ভুলই হবে। কারণ, ইতোমধ্যেই সাইকেল চালানো ছেলেটির সামনে পিছনে যে অনেকগুলো পরিচয়। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী হিসেবে পরিচিত ছেলেটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বায়েজিদ লাইনস হাই স্কুল থেকে জিপিএ-৫ সহ বোর্ডে সম্মিলিত মেধা তালিকায় নবম স্থান অধিকার করেন। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা থেকে উচ্চ মাধ্যমিকেও জিপিএ ৫ অর্জনকারী এই ছেলেটি পা রাখেন দেশের সেরা বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভর্তি হন বিবিএ অনুষদের অন্তর্গত ফিন্যান্স বিভাগে। সেখানকার পাট চুকিয়ে এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ তে অধ্যয়নরত।

কথা বন্ধু হিসেবে কাজ করছেন দেশের সেরা রেডিও স্টেশন রেডিও টুডে এফ এম ৮৯.৬ এ। সুললিত কণ্ঠে, কথার বিচিত্র ভঙ্গিতে আর অসাধারণ উপস্থাপনায় মুগ্ধ করে চলেছেন সহস্র শ্রোতাকে। আর তার ফলস্বরূপ ২০১২ সালে বাংলাদেশ সংস্কৃতি একাডেমী থেকে সেরা কথাবন্ধুর পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি। মিডিয়াকর্প এর আন্ডারে সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে ৭ দিনের ট্রেনিং শেষ করে এলেন। রেডিও টুডের আরেকটি শাখা সিঙ্গাপুরে আমার এফ এম ৯৬.৩ এর প্রথম আরজেও তিনি। কথার ছেলে সালমান ইতোমধ্যে লেখক হিসেবেও বেশ পরিচিত। গতবছর বইমেলায় এসেছিলো তার বই “ স্বপ্ন তোমার জঔ হবার”। সম্ভবত কোন তরুণের প্রথম বই এতোটা বাজিমাত করতে পারে নি। যতটা পারলো সালমান। আর এবছর প্রকাশিত হয়েছে দ্বিতীয় বই “জীবন থেকে নেয়া- অধ্যায় এক”। এবার যেন নিজেকেই ছাড়িয়ে গেল ছেলেটি। “জীবন থেকে নেয়া” বোধহয় তরুণদের জীবনকে নাড়িয়ে দিয়ে গেল। শক্ত হতে থাকলো লেখক সালমানের অবস্থান । অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদের ও মোছাঃ রাবেয়া বেগমের দ্বিতীয় সন্তান সালমানের শৈশব কাটে চট্টগ্রামের পাহাড়বেষ্টিত ক্যান্টনমেন্টের সুশৃঙ্খল পরিবেশে। মেধাবী সালমানের খেলাধুলাতেও আছে বেশ কিছু অর্জন। খেলেছেন বায়েজিদ লাইনস হাই স্কুলের পক্ষে আন্তঃজেলা ক্রিকেট টুর্নামেন্টে। সেখানেই শেষ নয়। পড়াশুনা আর খেলার পাশাপাশি কথার জাদুকর এই ছেলেটি যে অভিনয়েও পারদর্শী তার প্রমাণ পাওয়া গেলো স্বপ্ন সমীকরণ নাটকের মাধ্যমে। নিজেকে ঠিক কোন অবস্থানে দেখতে চান খেলোয়াড়, মেধাবী ছাত্র, দেশ সেরা আরজে, লেখক সালমান ? সালমান কিছুই বলে না- শুধু মুচকি হাসে। চোখের ভাষায় বুঝিয়ে দেয়- চেনা সাইকেলের প্যাডেল চেপে নিজের স্বপ্নকে ফেরি করে নিয়ে যাচ্ছে অজানার পথে। দুপাশে ঘন সবুজের আলিঙ্গন তাকে ছুঁতে বাড়িয়েছে হাত। অবিরাম সম্মুখে অগ্রসর হচ্ছে স্বপ্নের ফেরিওয়ালা ।।
বিভাগ:

Author Name

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.