সাময়িকী.কম
দৈনিক কালের কন্ঠের রিপোর্ট
মেহেদী হাসান : ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশ-ভারত স্থল সীমান্ত চুক্তি ও ২০১১ সালে ওই চুক্তির প্রটোকলেই স্পষ্টভাবে বলা আছে, দুই দেশের কোন সীমানা কিভাবে নির্ধারিত হবে। ওই চুক্তি ও প্রটোকল বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের চার রাজ্য- আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের সীমানারেখায় পরিবর্তন আসবে। সীমান্তচুক্তি ও প্রটোকল বাস্তবায়ন করা হলে ছিটমহল সমস্যা, অপদখলীয় ভূমি ও অচিহ্নিত সীমানা সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।
তবে এতে করে কোন দেশ বেশি জমি পাবে আর বেশি জমি হারাবে- এমন প্রশ্নও উঠেছে উভয় দেশে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিষয়টি ভোটের রাজনীতিতে 'অতিমাত্রায় স্পর্শকাতর' হওয়ায় ওই দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছর স্থলসীমান্ত চুক্তির বিষয়ে সচেতন করতে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, ২০১১ সালের প্রটোকলে সীমান্তে অচিহ্নিত অংশগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছিটমহল এবং অপদখলীয় ভূমি সমস্যার সমাধান করে স্থায়ী সীমানা চিহ্নিত করা হয়েছে। এর আওতায় বাংলাদেশের ভেতর থাকা ভারতের ১১১টি ছিটমহল (১৭ হাজার ১৬০.৬৩ একর) বাংলাদেশকে দেবে ভারত। অন্যদিকে ভারতের মধ্যে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল (সাত হাজার ১১০.০২ একর) বাংলাদেশ দেবে ভারতকে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই পুস্তিকায় বলা হয়েছে, কাগজের হিসাবে ছিটমহল বিনিময়ের ফলে বাংলাদেশের কাছে ভারতের জমি হারানোর মতো বিষয় মনে হলেও বাস্তব প্রেক্ষাপট কিছুটা ভিন্ন। ছিটমহলগুলো অন্য দেশের ভূখণ্ডের মধ্যে অবস্থিত। বাংলাদেশ বা ভারত কোনো দেশের সঙ্গেই ছিটমহলগুলোর ভৌত যোগাযোগ নেই। বিনিময়ের ফলে ভারতের মধ্যে থাকা ছিটমহলগুলো ভারতের সঙ্গে যুক্ত হবে আর বাংলাদেশের মধ্যে থাকা ছিটমহলগুলো যুক্ত হবে বাংলাদেশের সঙ্গে।
প্রটোকল বাস্তবায়িত হলে দুই দেশের মানচিত্রই পাল্টে যাবে। ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরে ওই প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। এতে উভয় দেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়সহ সীমান্তের বেশ কয়েকটি অংশে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রাপ্য ছিটমহল বেশি হওয়ায় নতুন মানচিত্রে দেশের আয়তন কিছুটা বাড়বে।
প্রটোকলে বিভিন্ন স্থানে সীমানারেখা পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। আবার কয়েকটি স্থানের সীমানাও চিহ্নিত করা হয়েছে। দেখা যাবে, কোথাও ভারতের সীমানারেখা বাংলাদেশের বর্তমান সীমানার ভেতর ঢুকে গেছে। আবার ভারতের সীমানার ভেতরও কোনো কোনো স্থানে বাংলাদেশের সীমানারেখা ঢুকে যাবে। ছিটমহল বিনিময়ের ফলে ভারত যে প্রায় ১০ হাজার একর জমি বেশি হারাবে, সে জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ পাবে না বলেও প্রটোকলে উল্লেখ রয়েছে।
প্রটোকলের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের প্রথম অংশে 'মুহুরী নদী (বিলোনিয়া) সেক্টর' শিরোনামে বলা হয়েছে, বিদ্যমান সীমানা পিলার (২১৫৯/৪৮-এস) থেকে সীমানারেখা আরো পশ্চিম দিকে টেনে ১৯৭৭-৭৮ সালের যৌথ সমীক্ষার ভিত্তিতে তৈরি মুহুরী নদী এলাকার নকশায় প্রদর্শিত বার্নিংঘাটের দক্ষিণ সীমায় গিয়ে মিলবে। এরপর তা উত্তর দিকে বাঁক নিয়ে বার্নিংঘাটের বাইরের সীমা বরাবর গিয়ে বর্তমান মুহুরী নদীর কেন্দ্রে মিশবে। এটি আবার বিদ্যমান মুহুরী নদীর মধ্যস্রোত বরাবর গিয়ে ২১৫৯/৩-এস সীমান্ত পিলার পর্যন্ত যাবে। এটি হবে স্থায়ী সীমানা। ১৯৭৪ সালের চুক্তি অনুযায়ী নদীর বর্তমান ধারা স্থিতিশীল রাখতে উভয় দেশের সরকারের নিজ নিজ অংশে বাঁধ দেওয়া উচিত বলে মনে করে এমনটিও এতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, এই সীমান্তের শূন্যরেখায় বেড়া দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে উভয় পক্ষ।
তৃতীয় অংশে 'লাঠিটিলা ও ডুমাবাড়ী' শিরোনামে রেডক্লিফের আঁকা সীমানারেখা ১৩৯৭ নম্বর পিলার থেকে সোজা দক্ষিণে ডুমাবাড়ী, লাঠিটিলা ও বড় পুটনিগাঁও মৌজার লোহার ব্রিজ পর্যন্ত এবং এরপর তা দক্ষিণ দিকে পুটনিছড়া বরাবর সিলেট-ত্রিপুরা সীমান্ত পর্যন্ত (পিলার নম্বর ১৮০০) টানার কথা বলা হয়েছে। চতুর্থ অংশে 'দইখাটা ৫৬ (পশ্চিমবঙ্গ-জলপাইগুড়ি)/পঞ্চগড়' শিরোনামে বলা হয়েছে, এই অংশের স্থায়ী সীমান্তরেখা ১৯৯৭-৯৮ সালের জরিপ অনুযায়ী দইখাটা-৫৬-এর সীমানা বরাবর ৪৪৪/৬ নম্বর সীমান্ত নকশায় (স্ট্রিপ শিট) বিদ্যমান ৭৭৪/৩২-এস সীমান্ত পিলার থেকে শুরু হবে। এরপর তা দইখাটা-৫৬-এর (পূর্ব থেকে পশ্চিম) দক্ষিণ সীমানা অনুসরণ করে ১৮ নম্বর পয়েন্ট পর্যন্ত যাবে। এরপর তা আবার দইখাটা-৫৬-এর (দক্ষিণ থেকে উত্তর) পশ্চিম সীমানা অনুসরণ করে ১৫ নম্বর পয়েন্টে সুই নদীর মাঝে গিয়ে মিশবে। ওই সীমান্তরেখা আবার সুই নদীর মাঝ বরাবর গিয়ে ২০১১ সালের ৩ আগস্ট যৌথ সম্মতির ভিত্তিতে প্রস্তুত সীমান্ত নকশা অনুযায়ী ১ নম্বর পয়েন্টে গিয়ে মিশবে। এরপর ৭৭৫ নম্বর মূল পিলারের মাধ্যমে ইতিমধ্যে আঁকা সীমান্ত অনুযায়ী আন্তর্জাতিক সীমান্ত নির্ধারিত হবে। প্রটোকলের তৃতীয় অনুচ্ছেদে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও আসাম সেক্টরে অপদখলীয় ভূমির সীমানা প্রসঙ্গে। এতে বলা হয়, ২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১১ সালের আগস্ট পর্যন্ত উভয় দেশের ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে চূড়ান্ত করা অপদখলীয় ভূমির নকশা অনুযায়ী অপদখলীয় ভূমি বিনিময়ের মাধ্যমে স্থায়ী সীমান্ত নির্ধারিত হবে। এতে আরো বলা হয়, ছিটমহল সম্পর্কিত নকশাগুলো ছাপার পর উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা তাতে সই করবেন এবং এরপর ছিটমহলগুলো বিনিময় করা হবে।
তৃতীয় অনুচ্ছেদে 'পশ্চিমবঙ্গ সেক্টর' শিরোনামে ছয়টি এলাকার সীমান্তের বিষয় উল্লেখ রয়েছে। বোসমারী-মাধুগারি (কুষ্টিয়া-নদীয়া) এলাকা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, যৌথ জরিপ ও ২০১১ সালের জুন মাসে দুই দেশের সম্মতি অনুযায়ী, এ সীমান্ত ১৯৬২ সালের মানচিত্র অনুসারে ১৫৪/৫-এস সীমানা পিলার থেকে শুরু করে মাথাভাঙ্গা নদীর পুরনো ধারা অনুসরণ করে ১৫১/১-এস নম্বর সীমান্ত পিলারে গিয়ে মিশবে। আন্ধারকোটা (কুষ্টিয়া-নদীয়া) এলাকা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, যৌথ জরিপ ও ২০১১ সালের জুনে দুই দেশের সম্মতি অনুযায়ী, এ সীমানা ১৫২/৫-এস নম্বর পিলার থেকে টেনে বর্তমান মাথাভাঙ্গা নদীর কূল অনুসরণ করে ১৫৩/১-এস নম্বর সীমান্ত পিলার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। পাকুরিয়া (কুষ্টিয়া-নদীয়া) এলাকা প্রসঙ্গে প্রটোকলে বলা হয়েছে, যৌথ জরিপ ও ২০১১ সালের জুন মাসে দুই দেশের সম্মতি অনুযায়ী এ সীমানারেখা ১৫১/১-এস নম্বর পিলার থেকে টেনে ১৫২/২-এস নম্বর সীমান্ত পিলার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। চর মহিষকুণ্ডি (কুষ্টিয়া-নদীয়া) এলাকা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, যৌথ জরিপ ও ২০১১ সালের জুনে উভয় দেশের সম্মতির ভিত্তিতে এ এলাকার সীমানারেখা বিদ্যমান সীমান্ত পিলার ১৫৩/১-এস থেকে টেনে মাথাভাঙ্গা নদীর তীর বরাবর ১৫৩/৯-এস নম্বর সীমান্ত পিলার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। বেরুবাড়ী (পঞ্চগড়-জলপাইগুড়ি) এলাকা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ১৯৯৬-১৯৯৮ সালে যৌথভাবে চিহ্নিত সীমান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশের অপদখলে থাকা বেরুবাড়ী (পঞ্চগড়-জলপাইগুড়ি) এবং ভারতের অপদখলে থাকা বেরুবাড়ী ও সিংঘাপাড়া-খুদিপাড়ার (পঞ্চগড়-জলপাইগুড়ি) সীমানারেখা আঁকা হবে। প্রটোকলের অপদখলীয় ভূমি অংশে মেঘালয় সেক্টরের ছয়টি এলাকার উল্লেখ রয়েছে। পিরদিওয়া-পদুয়া এলাকা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, যৌথ জরিপ ও উভয় পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে এ এলাকার সীমানারেখা ১২৭০/১-এস নম্বর সীমান্ত পিলার থেকে ১২৭১/১-টি নম্বর পিলার পর্যন্ত টানা হবে। ডাউকি/তামাবিল এলাকা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ১২৭৫/১-এস নম্বর সীমান্ত পিলার থেকে ১২৭৫/৭-এস নম্বর সীমান্ত পর্যন্ত সীমান্তরেখা আঁকা হবে। উভয় পক্ষ এ সীমান্তের শূন্যরেখায় বেড়া দেওয়ার ব্যাপারেও সম্মত হয়েছে। মুক্তাপুর-ডিবির হাওর এলাকা প্রসঙ্গে প্রটোকলে বলা হয়েছে, ভারতীয় নাগরিকরা এ এলাকার কালীমন্দির পরিদর্শন করতে পারবে। এ ছাড়া মুক্তাপুর এলাকার পাড় থেকে মুক্তাপুর/ডিবির হাওর এলাকার জলসীমানা থেকে ভারতীয় নাগরিকরা পানি উত্তোলন ও মাছ ধরতে পারবে। ত্রিপুরা সেক্টর শিরোনামে ত্রিপুরা-মৌলভীবাজার সেক্টরের চন্দননগর-চম্পারাই চা বাগান প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, এ এলাকার সীমানারেখা বিদ্যমান ১৯০৪ নম্বর সীমান্ত পিলার থেকে সোনারিছড়া নদী বরাবর ১৯০৫ নম্বর পিলারে গিয়ে মিশবে। প্রটোকলে 'আসাম সেক্টর' শিরোনামে কলাবাড়ী (বরইবাড়ী) এলাকা সম্পর্কে বলা হয়েছে, বিদ্যমান ১০৬৬/২৪-টি সীমান্ত পিলার থেকে সীমানারেখা টেনে ১০৬৭/১৬-টি নম্বর সীমান্ত পিলারে নিয়ে যাওয়া হবে। এ সেক্টরের পাল্লাথল এলাকার সীমান্তরেখা ১৩৭০/৩-এস নম্বর সীমান্ত পিলার থেকে চা বাগানের বহির্সীমানা বরাবর ১৩৭১/৬-এস নম্বর পিলার পর্যন্ত এবং ১৩৭২ নম্বর সীমান্ত পিলার থেকে চাষাবাদের এলাকার বহির্সীমানা বরাবর ১৩৭২/২-এস নম্বর সীমান্ত পিলার পর্যন্ত টানা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ভূমিসংক্রান্ত বিরোধ পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা সেক্টরে মোট ২৫টি অপদখলীয় ভূখণ্ডকে ঘিরে। এগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের দখলে সাতটি এবং ভারতের দখলে রয়েছে ১৮টি। পশ্চিমবঙ্গের ৯টি, ত্রিপুরার তিনটি, মেঘালয়ের ১০টি এবং আসামের একটি অপদখলীয় জমির যৌথ জরিপের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও পঞ্চগড় জেলায় ভারতীয় ছিটমহলের সংখ্যা ১১১টি।
স্থলসীমান্ত চুক্তির কালপঞ্জি
১৯৭৪ সাল : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অপদখলীয় ভূমি ও ছিটমহল সমস্যা সমাধানে স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৭৪ সালের ১৬ মে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্বাক্ষরিত ওই চুক্তিটি ঐতিহাসিক 'মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি' নামে পরিচিত। চুক্তি অনুযায়ী, দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহলে যাওয়ার জন্য ভারত বাংলাদেশকে তিন বিঘা করিডর শর্তসাপেক্ষে ব্যবহার করতে দিতে রাজি হয়।
১৯৯২ সাল : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাওয়ের সরকার বাংলাদেশকে তিন বিঘা করিডর ব্যবহারের সুযোগ দেয়। প্রাথমিকভাবে, দৈনিক ১২ ঘণ্টা করে ব্যবহারের সুযোগ পায় বাংলাদেশিরা।
২০১১ সাল : ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং ঢাকা সফরের সময় তিন বিঘা করিডর বাংলাদেশিদের সার্বক্ষণিক ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার ও তাৎক্ষণিকভাবে তা কার্যকরের ঘোষণা দেন। ওই সফরেই ১৯৭৪ সালের স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে একটি প্রটোকল স্বাক্ষর করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ড. মনমোহন সিংয়ের উপস্থিতিতে প্রটোকলে স্বাক্ষর করেন উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদ্বয় যথাক্রমে ডা. দীপু মনি ও এস এম কৃষ্ণা।
২০১৩ সাল : স্থলসীমান্ত চুক্তি ও এর প্রটোকল বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সরকার ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় সংবিধান সংশোধন বিল উত্থাপন করে। কিন্তু তৎকালীন বিরোধী দল বিজেপি আর পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরোধিতায় তা আটকে যায়।
২০১৪ সাল : নভেম্বর মাসে ভারতের বিদেশবিষয়ক সংসদীয় কমিটি সর্বসম্মতিতে স্থলসীমান্ত চুক্তি ও এর প্রটোকল বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধন বিল অনুমোদন করে। ১ ডিসেম্বর ওই বিলটি ভারতের সংসদের উভয় কক্ষ লোকসভা ও রাজ্যসভায় উত্থাপন করা হয়।
২০১৫ সাল : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের মন্ত্রিসভা ৫ মে স্থলসীমান্ত চুক্তি ও এর প্রটোকল বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধন বিল অনুমোদন করে।
যেসব ধাপ বাকি : ভারতীয় সংবিধানের ৩৬৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব ভারতের পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদন হতে হবে। এরপর তা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতি তা অনুমোদন করলেই সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।