-রফিকুল ইসলাম সাগর
সাময়িকী.কম
ঢাকার মতিঝিলের একটি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা করা হয় তার। ফ্লাইটের চার-পাচ ঘন্টা আগে নোয়াখালী থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে এসে পৌছেন। আত্বীয়-স্বজন ছেড়ে অনেক দুরে চলে যাচ্ছেন জীবন যুদ্ধে জয় আনতে। মন ভাল নেই। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গেইট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেন মিজান। বিদায় জানাতে এসেছিলেন মা-বাবা,ভাই-বোন এবং সারাজীবনের সঙ্গী তার স্ত্রী। সবার চোখে জ্বল দেখে সবার সামনে না কাদলেও গেইট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে না করতেই চোখে জ্বল চলে আসে তার।
মিজান বোডিং পাস নিয়ে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার জন্য লাইনে দাড়ায়। একে একে সামনের জনদের পরে এলো তার সিরিয়াল। পাসপোর্ট তুলে দিলেন ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে, তার সঙ্গে দুবাই যে কোম্পানিতে কাজ করবেন সে কোম্পানির চুক্তি পত্র দিলেন। চুক্তি পত্র হাতে নিয়ে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশ বলল, এই চুক্তি পত্রে তো স্বাক্ষর করা হয়নি। আপনাকে দুবাই যেতে দেয়া হবে না। মিজান ভয় পেয়ে গেলেন। মিজান জানে বাংলাদেশ বিমানবন্দরে প্রতিদিনই এরকম ঘটনা ঘটে। যারা বিদেশ যায় যাওয়ার সময় তাদের সাহস দেয়ার পরিবর্তে,তাদের শুভ কামনা করার পরিবর্তে তাদের ভয় দেখায় বিমান বন্দর কর্মকর্তারা। ভোগান্তিতে ফেলে সময় নষ্ট করেন।
মিজান বললেন, আমি যাব দুবাই, আমার কোম্পানি দুবাইযে, আপনাকে ৫০০ টাকা দিলে স্বাক্ষর কে করবে? আপনি ওখানে গিয়ে অপেক্ষা করুন, আপনার সঙ্গে পড়ে কথা বলছি- ইমিগ্রেশন অফিসারের এমন উত্তরের পাল্টা জবাব দিলেন মিজান, আমি ওখানে অপেক্ষা করব কেন? আপনি আগে আমার ঝামেলা শেষ করুন। এভাবে তর্ক-বিতর্ক হওয়ার এক পর্যায়ে এক জন সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা দূর থেকে এগিয়ে এলেন। কী হয়েছে? মিজান তার কাছে বললেন, আমার চুক্তি পত্রে নাকি সাইন হয়নি তার জন্য ইমিগ্রেশন অফিসার আমার কাছে ৫০০ টাকা চান। সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তা বললেন, তাকে হয়রানি না করে যেতে দিন।
পাচ বছর পর যখন মিজান বাংলাদেশে ফিরে এলেন। ইমিগ্রেশন থেকে বের হয়ে আসার সময় তার ব্যাগ স্ক্যান মেশিনের ভিতর দেয়া হলো। একজন পুলিশ বললেন, আপনার ব্যাগ খুলুন। মিজান বললেন কেন? আপনার ব্যাগে কী আছে দেখব। আমার ব্যাগে কী আছে স্ক্যানে কী দেখেননি? আমি ব্যাগ খুললে আপনি পরে ব্যাগ গুছিয়ে দিবেন? পুলিশ বলল, বিদেশ থেকে অত টাকা আয় করলেন আমাদের চা-নাস্তার জন্য কিছু দিন। মিজান বললেন, আমি যখন বিদেশ গিয়েছিলাম তখন আপনারা আমাকে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছিলেন যে আমি আপনাদের চা-নাস্তা করার জন্য টাকা দেব? উত্তরে পুলিশ আর কোনো জবাব দিল না। পিছন থেকে অনেক বাঙালি বলাবলি করছিল দেশের সব মানুষ যদি এমন হত তাহলে কেউ আমাদের হয়রানি করার সাহস করত না।
মিজানের সাথে যেই ঘটনা গুলো ঘটেছে বাংলাদেশ বিমানবন্দরে প্রতিদিন কারো না কারো সাথে এই ঘটনা ঘটছে। দেখার যেন কেউ নেই। যারা নতুন তাদের হয়রানি ভয়-ভীতি দেখানো হয় বেশি। বিমান বন্দরের কর্মীরা অনিয়মকেই করে নিয়ম। সূত্র : দৈনিক সমকাল।
সাময়িকী.কম
আমার বন্ধু মিজান বর্তমানে মালয়েশিয়া অবস্থান করছেন। তার আগে তিনি সৌদি আরব,দুবাই ও বাহরাইন প্রবাস জীবন কাটিয়েছেন। ১৪ বছরের প্রবাস অভিজ্ঞতা তার। বহুবার বাংলাদেশে যাওয়া-আশা করেছেন। বাংলাদেশ বিমানবন্দর ও বিমানবন্দরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি চরম ক্ষোভ তার। শুধু মিজান না মিজান ছাড়াও আরো অনেকের মুখে এই ক্ষোভের কথা শুনেছি। সেদিন মিজান তার প্রথম বিদেশ (দুবাই) যাওয়ার ঘটনা আমার সাথে শেয়ার করলেন।
ঢাকার মতিঝিলের একটি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা করা হয় তার। ফ্লাইটের চার-পাচ ঘন্টা আগে নোয়াখালী থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে এসে পৌছেন। আত্বীয়-স্বজন ছেড়ে অনেক দুরে চলে যাচ্ছেন জীবন যুদ্ধে জয় আনতে। মন ভাল নেই। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গেইট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেন মিজান। বিদায় জানাতে এসেছিলেন মা-বাবা,ভাই-বোন এবং সারাজীবনের সঙ্গী তার স্ত্রী। সবার চোখে জ্বল দেখে সবার সামনে না কাদলেও গেইট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে না করতেই চোখে জ্বল চলে আসে তার।
মিজান বোডিং পাস নিয়ে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার জন্য লাইনে দাড়ায়। একে একে সামনের জনদের পরে এলো তার সিরিয়াল। পাসপোর্ট তুলে দিলেন ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে, তার সঙ্গে দুবাই যে কোম্পানিতে কাজ করবেন সে কোম্পানির চুক্তি পত্র দিলেন। চুক্তি পত্র হাতে নিয়ে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশ বলল, এই চুক্তি পত্রে তো স্বাক্ষর করা হয়নি। আপনাকে দুবাই যেতে দেয়া হবে না। মিজান ভয় পেয়ে গেলেন। মিজান জানে বাংলাদেশ বিমানবন্দরে প্রতিদিনই এরকম ঘটনা ঘটে। যারা বিদেশ যায় যাওয়ার সময় তাদের সাহস দেয়ার পরিবর্তে,তাদের শুভ কামনা করার পরিবর্তে তাদের ভয় দেখায় বিমান বন্দর কর্মকর্তারা। ভোগান্তিতে ফেলে সময় নষ্ট করেন।
মিজান বললেন, স্যার এখন আমি কি করব? বিমান বন্দরের বাইরে আমার বিদেশ যাওয়ার এজেন্ট আছে, আমি একটু তার সঙ্গে কথা বলে আসি। কর্মকর্তার উত্তরে বলেন, না আপনি এখন আর বাইরে যেতে পারবেন না। আমাকে ৫০০ টাকা দিন আমি সব ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। মিজান এবার মূল ঘটনা বুঝতে পারলেন।
মিজান বললেন, আমি যাব দুবাই, আমার কোম্পানি দুবাইযে, আপনাকে ৫০০ টাকা দিলে স্বাক্ষর কে করবে? আপনি ওখানে গিয়ে অপেক্ষা করুন, আপনার সঙ্গে পড়ে কথা বলছি- ইমিগ্রেশন অফিসারের এমন উত্তরের পাল্টা জবাব দিলেন মিজান, আমি ওখানে অপেক্ষা করব কেন? আপনি আগে আমার ঝামেলা শেষ করুন। এভাবে তর্ক-বিতর্ক হওয়ার এক পর্যায়ে এক জন সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা দূর থেকে এগিয়ে এলেন। কী হয়েছে? মিজান তার কাছে বললেন, আমার চুক্তি পত্রে নাকি সাইন হয়নি তার জন্য ইমিগ্রেশন অফিসার আমার কাছে ৫০০ টাকা চান। সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তা বললেন, তাকে হয়রানি না করে যেতে দিন।
পাচ বছর পর যখন মিজান বাংলাদেশে ফিরে এলেন। ইমিগ্রেশন থেকে বের হয়ে আসার সময় তার ব্যাগ স্ক্যান মেশিনের ভিতর দেয়া হলো। একজন পুলিশ বললেন, আপনার ব্যাগ খুলুন। মিজান বললেন কেন? আপনার ব্যাগে কী আছে দেখব। আমার ব্যাগে কী আছে স্ক্যানে কী দেখেননি? আমি ব্যাগ খুললে আপনি পরে ব্যাগ গুছিয়ে দিবেন? পুলিশ বলল, বিদেশ থেকে অত টাকা আয় করলেন আমাদের চা-নাস্তার জন্য কিছু দিন। মিজান বললেন, আমি যখন বিদেশ গিয়েছিলাম তখন আপনারা আমাকে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছিলেন যে আমি আপনাদের চা-নাস্তা করার জন্য টাকা দেব? উত্তরে পুলিশ আর কোনো জবাব দিল না। পিছন থেকে অনেক বাঙালি বলাবলি করছিল দেশের সব মানুষ যদি এমন হত তাহলে কেউ আমাদের হয়রানি করার সাহস করত না।
মিজানের সাথে যেই ঘটনা গুলো ঘটেছে বাংলাদেশ বিমানবন্দরে প্রতিদিন কারো না কারো সাথে এই ঘটনা ঘটছে। দেখার যেন কেউ নেই। যারা নতুন তাদের হয়রানি ভয়-ভীতি দেখানো হয় বেশি। বিমান বন্দরের কর্মীরা অনিয়মকেই করে নিয়ম। সূত্র : দৈনিক সমকাল।